ত্বকের পরে লিভার মানব দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ যার ওজন প্রায় ৩ পাউন্ডের মতো। হজমক্রিয়া পরিচালনা, বিপাক ক্রিয়া, অনাক্রম্যতা এবং দেহে বিভিন্ন পুষ্টির সঞ্চয় ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে এই লিভার। বিশেষ এই অঙ্গটি দেহের কোষে প্রয়োজনীয় শক্তি এবং পুষ্টির জোগান দিয়ে থাকে যেগুলো মানবদেহের কোষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে। এটি রক্তনালী থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয় এবং খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে বলে জানিয়েছেন হোলিস্টিক পুষ্টিবিজ্ঞানী হারমিট সিউড়ি। লিভারের এই গুরুত্বপূর্র্ণ কাজগুলোকে সচল রাখতে এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষা করতে যে খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন সেগুলো হল-  রসুন ঃ রসুন লিভারকে এনজাইম তৈরিতে সহায়তা করে, যা শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এছাড়া রসুনের প্রচুর পরিমাণে অ্যালিসিন এবং সেলেনিয়াম নামক দুটি প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা পরিপাকে সহায়তা করে।
গ্রিন টি ঃ গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটচিন নামক এক ধরনের উদ্ভিজ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লিভারের সামগ্রিক কাজ পরিচালনাকে সহায়তা করে থাকে। তাই এই গ্রিন টি খাওয়া লিভারের জন্য বেশ উপকারী।
জাম্বুরা ঃ জাম্বুরা ফলটি সরাসরি বা জুস করে খেলে তা ক্যানসার উৎপাদক উপাদান এবং টক্সিন নির্মূলে লিভারকে সহায়তা করে থাকে। এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
শালগম ঃ শালগমে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা লিভারের সার্বিক কাজে সহায়তা করে থাকে। ন্স সবুজ শাকে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন অন্যান্য খাবারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ এবং কীটনাশকের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করে থাকে। লিভারের জন্যও সবুজ শাক বেশ উপকারী।
আভাকাডো ঃ আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় আভাকাডোর পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে তা আপনার দেহে গøুটাথিয়ন নামক এক ধরনের  অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে যা লিভারকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ দেহ থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে।
ব্রকোলি ঃ ব্রকোলি দেহে গøুকোসিনোলেট উপাদানের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা হজমে সহায়ত এনজাইম তৈরি করে।
লেবু ঃ এ বিষয়ে আমরা সবাই নিশ্চয়ই জানি যে সাইট্রাস জাতীয় ফল লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা আমাদের দেহের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু এছাড়াও লেবু দেহের বিভিন্ন টক্সিন নির্মূল এবং হজমে সহায়তা করে থাকে।  হলুদ ঃ মশলা হিসাবে হলুদ খেলে তা আমাদের শরীরে হজমে এবং পিত্তথলী পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি লিভারের প্রাকৃতিক ডেটক্স হিসাবে কাজ করে। মূল্যবান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভরপুর হলুদ লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, হেপাটাইটিস বি এবং সি এর ভাইরাস নির্মূলেও এই হলুদ অত্যন্ত সহায়ক।
আখরোট ঃ আখরোটে গøুটাথিয়ন এবং ওমাগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা লিভার পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে। আমলকী ঃ আমলকীর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। আমলকী লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং হজমে সহায়তা করে।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।