শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

কাশি ও জ্বরে তুলসী

| প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলা নাম তুলসি হলেও সংস্কৃত নাম তুলসী চবা সুরমা। ইংরেজরা তুলসীকে চেনেন ইধংরষ চষধহঃ নামে। আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি সকলেই খুব ভালোভাবে এই তুলসী গাছ চেনেন। মুসলমানরা মনে করেন এই গাছ হিন্দুদের উপাসনার বস্তু। তা কিন্তু একাবারেই ঠিক নয়। এ গাছ থেকে আমরা অনাসায়ে কিছু উপকরণ তৈরি করতে পারি যা কঠিন রোগের ঔষধ। মূলত তুলসীর ঔষধী ব্যবহার ব্যাপক। তুলসীপাতা স্নায়ুটনিক এবং স্মৃতিবর্ধক হিসেবে পরিচিত। ফুসফুসের শ্লেষ্মা নিঃসরণে তুলসীপাতার রস অতুলনীয়। পাকস্থলীর শক্তি বর্ধনেও তা অনন্য। তুলসীর বীজ গায়ের চামড়াকে মসৃণ রাখে। বীজ সেবনে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার  জ্বরে তুলসীপাতার রসের ব্যবহার অনেকটা শাস্ত্রীয় বিষয় হিসেবে পরিচিত। বিশেষত ঋতু পরিবর্তন হেতু যে জ্বর, ম্যালেরিয়া জ্বর এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে সমাজে। এর জন্য  কচি তুলসীপাতা চায়ের সাথে সেদ্ধ করে পান করলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু  জ্বর প্রতিরোধ হয়ে থাকে। একিউট জ্বরে তুলসীপাতার সেদ্ধ রসের সাথে এলাচিগুঁড়ো এবং চিনি ও দুধ মিশিয়ে পান করলে দ্রæত উপকার পাওয়া যায়। গলক্ষতের জন্য তুলসীপাতার সেদ্ধ পানি পান করলে এবং গারগল করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তুলসীপাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে ফুসফুসীয় সমস্যায়। ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, ইনফ্লয়েঞ্জা, কাশি ও ঠান্ডাজনিত রোগে তুলসীপাতার রস, মধু ও আদা মিশিয়ে পান করলে উপশম পাওয়া যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে তুলসীপাতার রস, লবণ ও লবঙ্গ মিশিয়ে পান করলে ফল পাওয়া যায়। এ ধরনের রোগের ব্যবহারের জন্য তুলসীপাতা আধা লিটার পানি সেদ্ধ করতে হয় ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ তা অর্ধেকে পরিণত হয়। কিডনির পাথরে তুলসীর ব্যবহার চমকপ্রদ ফলাফল দিয়ে থাকে। তুলসীপাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে নিয়মিত একাধারে ৬ মাস  পর্যন্ত ব্যবহারে কিডনির পাথর অপসারিত হয়ে থাকে। এছাড়া  তুলসী কিডনিকে শক্তিশালী করে থাকে। হৃদরোগেও তুলসীর ব্যবহার রয়েছে। কোলেস্টেরল বৃদ্ধিজনিত হৃদরোগে তুলসীপাতার রস খুব  উপকারী। এমনকি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় তুলসী। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় তুলসীর রস। তুলসীপাতার রস শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষত শিশুদের ঠান্ডা লাগা, জ্বর হওয়া, কাশি লাগা, ডায়েরিয়া ও বমির জন্য তুলসীপাতার রস ভালো কাজ করে। জল বসন্তে পুঁজ শুকাতেও তুলসীপাতা ব্যবহৃত হয়। মানসিক চাপে অ্যান্টিস্ট্রেস এজেন্ট হিসেবে  ব্যবহৃত হয়।  সা¤প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক অবসাদ প্রশমনে এমনকি প্রতিরোধে তুলসী চমৎকার কাজ করে। মুখের ঘা শুকাতেও তুলসীপাতা ভালো কাজ করে। মুখের ইনফেকশন দূর করতে তুলসীপাতা অতুলনীয়।
ষ ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিষ্ট,০১৭১৬২৭০১২০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন