স্টাফ রিপোর্টার : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, আমরা এরই মধ্যে গণমাধ্যম নীতিমালার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর জন্য সিনিয়র সাংবাদিকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনলাইন নীতিমালা প্রস্তুত হয়েছে। তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। আর সাইবার সংক্রান্ত আইন করতে আরো ৬ মাস লাগতে পারে। সাইবার আইন চূড়ান্ত হলে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল হয়ে যাবে। আইনমন্ত্রীও ইতোমধ্যে এ বিষয়টি বলেছেন। গতকাল রবিবার সকালে পিআইবিতে বিসিডিজেসি ও ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত স্টেট অব জার্নালিজম ইন বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে তথ্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশের সাইবারজগতকে নিরাপদ রাখতে সমন্বিত সাইবার আইন ও অনলাইনসহ সকল ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকে প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা দিতে অনলাইন নীতিমালা ও স¤প্রচার আইন প্রণীত হচ্ছে। সংবিধানে প্রদত্ত অধিকারগুলো বজায় রেখে গণমাধ্যম ও সাইবারজগত নিয়ে কর্মরত অংশীজনরাই এসকল নীতি ও আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হচ্ছে। গণমাধ্যম আইন সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এরই মধ্যে গণমাধ্যম নীতিমালার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর জন্য সিনিয়র সাংবাদিকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনলাইন নীতিমালা প্রস্তুত হয়েছে। তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বর্তমানে আওয়ামীলীগ সরকার এবং গণমাধ্যম একপক্ষে অবস্থান করছে এবং জঙ্গিবাদ ও সাইবার অপরাধীরা অন্যপক্ষে অবস্থান করছে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ ও সাইবার অপরাধীদের প্রতিহত করতে হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সরকার গণমাধ্যমের উপর কোন চাপ প্রয়োগ করছে না। বর্তমানে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তারা স্বাধীন ভাবে তাদের মত প্রকাশ করছে। তবে এই সরকারের সময় ২টি টেলিভিশন, ৩৫টি অনলাইন এবং ১টি প্রিন্ট পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে। এদেরকে সরকারের সমালোচনার জন্য বন্ধ করা হয়নি। এদের একটি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় নিহত হয়েছে এমন ভুয়া খবর প্রকাশ করে। তাছাড়া যেগুলোকে বন্ধ করা হয়েছে তাদের কেউ কেউ সম্প্রদায়িক উস্কানিতে লিপ্ত ছিলেন এসব গণমাধ্যম। এ কারনে এগুলোকে বন্ধ করা হয়েছে দাবি তথ্য মন্ত্রীর। অনুষ্ঠানে হাসানুল হক ইনু বলেন, গণমাধ্যম কখনো মিথ্য খবর প্রচার বা প্রকাশের মাধ্যম হতে পারে না। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। যারা ভুয়া সংবাদ প্রচার করে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। যদি এটা করা না যায় তবে গণমাধ্যমের মানক্ষুন্ন হবে। রাষ্ট্রর কাছ থেকে গণমাধ্যম কোন ধরণের হুমকীর মধ্যে নেই বলে জানান তিনি। গণমাধ্যম আইন সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এরই মধ্যে গণমাধ্যম নীতিমালার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর জন্য সিনিয়র সাংবাদিকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনলাইন নীতিমালা প্রস্তুত হয়েছে। তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। আর সাইবার সংক্রান্ত আইন করতে আমাদের আরো ৬ মাস লাগতে পারে। এরপর আইসিটি এ্যাক্ট ৫৭ বাতিল করা হবে।
সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সুবহান চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা এমনি এমনি আসেনি। অনেকে ত্যাগের বিনিময়ে এটাকে অর্জন করে নিতে হয়েছে। সুতরাং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও আমাদের অর্জন করে নিতে হবে। তার জন্য আগে আমাদের গণমাধ্যম কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানবাধীকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমাদের এখানে কেউ কেউ কথা বলে পার পেয়ে যান। আবার কেউ কথা বললেই তাকে হয়রানি করা হয়। এটা কেন হবে? আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক কথা বলি যার কোন প্রতিক্রিয়া হয় না কিন্তু আমাদেরই একজন যখন কথা বলেন তখন তার কি হবে-তা কেউ জানেন না। এই সংস্কৃতি থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ফ্লিম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক এ জে এম সফিউল আলম ভ’ইয়া, পিআইবির মহপরিচালক শাহ আলমগীর, গীতি আরা নাসরিনসহ প্রমূখ।
ভাস্কর্য স্থাপন মূর্তিপূজা নয়, সা¤প্রদায়িক অপরাজনীতি দমন করুন -তথ্যমন্ত্রী
অপর জাতীয় প্রেসকাবের সামনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ আয়োজিত ‘ভাস্কর্য মানে মূর্তিপূজা না, ভাস্কর্য বিরোধিতার নামে তেঁতুলহুজুরগোিষ্ঠী সা¤প্রদায়িক রাজনীতি করছে’ শীর্ষক মানববন্ধন ও পথসভায় একটি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশের সকল ভাস্কর্যকে রক্ষার দাবি এবং ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে সা¤প্রদায়িক অপরাজনীতির জিগির তোলার চেষ্টা কঠোরভাবে দমনের আহŸান জানান। ভাস্কর্য নির্মাণ এবং স্থাপন মূর্তিপূজা নয়, ভাস্কর্যের কারণে ধর্মের অসম্মান হয়না উখে করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ধর্মকে অসম্মান করা নয়। একারণে ভাস্কর্য নির্মাণ এবং স্থাপনে ধর্মের অসম্মান হয় না। ভাস্কর্য বাংলাদেশ ও পৃথিবীর হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প মাধ্যম। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে মৃণাল হকের ভাস্কর্য স্থাপনের পর থেকেই হেফাজতে ইসলাম ও তেঁতুলহুজুর গোষ্ঠী ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করছে। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই সুপ্রীম কোর্টের ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে হেফাজতের সা¤প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের সকল ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। তারা ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে কার্যত অতীতের সা¤প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপরাজনীতির জিগির তোলার চেষ্টা করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন