মহসিন রাজু , বগুড়া থেকে : শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় অপ্রাসঙ্গিক এক আলোচনায় নাজেহাল হয়েছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন । আর এই ঘটনার কিছু সময় পরেই নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন তরুণ বিএনপি নেতা ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভিপি শহীদ-উন-নবী সালাম। সালামের গ্রেফতারের পরপরই বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতির বিরোধী গ্রæপের নেতা কর্মীরা দাবি করছেন, সভাপতি গ্রæপের এক নেতার ইঙ্গিতেই পুলিশ সালামকে গ্রেফতার করেছে। তাদের দাবি, পুলিশের গত কিছু দিনের আচরণে বগুড়া জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গদলের নেতা কর্মীদের মধ্যে যারা সভাপতি ভিপি সাইফুল এবং তার ঘনিষ্ট সহযোগী মো: শোকরানার বিরোধীদের কাছে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে , যে পুলিশ এখন বিএনপির অর্šÍবিরোধে কাউন্টার পার্ট ’ হয়ে উঠেছে ।
প্রমাণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, অতি সম্প্রতি বগুড়ায় হাবিবুন্নবী খান সোহেলের কর্মীসভা কোথায় হবে তা নির্ধারণের জন্য চলা বৈঠকের সময় সভাপতি ও তার সমর্থকরা চাচ্ছিলেন সভাটি সভাপতির ঘনিষ্ট মো: শোকরানার মালিকানাধীন নাজ গার্ডেনেই হোক। আর অধিকাংশই চাচ্ছিলেন যে সভাটি শহরের মধ্যেই কোথাও হোক। পরে দেখা গেল সভাস্থলের অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে অনুমতির জন্য গেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারাও বলছেন, নাজ গার্টেন তো শহরের বাইরে, গুড প্লেস ওটা, ওখানেই মিটিংটা করেননা কেন ? পুলিশ কর্মকর্তার ওই ধরণের উক্তিতে বিস্মিত হন বিএনপি নেতারা । এর পরই দেখা গেল, বগুড়া জেলা যুবদলের সভাপতিকে পুলিশ সদর থানার ওসির সাথে দেখা করার জন্য জরুরি তলব করেছে। শান্ত নামে যুবদলের এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকার বাদল নামে একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে হাবিবুন্নবী সোহেলের মিটিং এর দিন সকালে শাজাহানপুর থানায় ডেকে সকাল থেকে দুপুরে মিটিং শেষ হওয়া তাকে আটকে রাখা হয় যেন তিনি সভায় উপস্থিত হতে না পারেন। শুধু তাই নয়, উমর ফারুক খান নামে একজন বিএনপি নেতাকে জামিনে কারামুক্তির পরপরই জেল গেট থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেল ডিবি’র একটি দল। তাছাড়াও বেছে বেছে যারা কেবল ভিপি সাইফুলের বিরোধী কেবল তাদের বাড়িতেই চলছে পুলিশের অভিযান কেন? সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশকে নিরপেক্ষ ভুমিকা পালনের আহŸান জানিয়েছে বিএনপির নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগুড়া জেলা বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলছেন, গত সোমবার গাবতলীর পদ্মপাড়ায় প্রবাসী তারেক রহমানের সাথে লিয়াঁজোর দায়িত্ব পালনকারী আতিকুর রহমান রুমন ওরফে রুমন রহমান পরিচালিত একটি একটি এতিমখানায় জেলা বিএনপির উদ্যোগে ইফতার আয়োজন করা হল, যেখানে প্রাপ্য সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ওখানে যাওয়া বা আসার পথে পুলিশ কাউকে কাউকে ধরার প্রস্তুতি নিয়েছে এমন গুজবেও অনেকে ওখানে যাননি । ফলে দাওয়াত না পাওয়া এবং উপস্থিত হতে না পারা নেতা কর্মিদের আশঙ্কা যে প্রবাসী নেতা তারেক রহমানের কাছে পাঠানো এই ইফতার মাহফিলের ছবি ও নিউজ দেখিয়ে বোঝানো হবে যে ,‘‘ ভাইয়া দ্যাখেন হামরা (আমরা ) ছাড়া কেউই ব্এিনপি ও আপনার সাথে নাই ।’’
বগুড়া জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার যে ঘটনায় সাধারণ সম্পাদক নাজেহাল হয়েছেন, তার বর্ণনা দিয়ে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বগুড়া বিএনপির ইফতার মাহফিল ও হোটেল নাজ গার্ডেনে হবে বলে সভাপতি যুক্তি তুলে ধরে মন্তব্য করলে সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি এই মুহুর্তে প্রাসঙ্গিক নয় এটা নিয়ে পরে ভাবা যাবে বলা মাত্র তাকে নাজেহাল করা হয় । পরে অবশ্য নাজেহালকারীকে মাফ চাওয়ানো হয় । কিন্তু এই ঘটনার রেশ ধরে নেতা কর্মীদের মধ্যে অর্ন্তবিরোধ ক্রমশ জোরদার হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন