শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গোবিন্দগঞ্জে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মা-ভাই সহ স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে জখম

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা)উপজেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে স্কুলছাত্রী তাঁর মা ও দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম সহ ঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে বখাটে মিলন চন্দ্র মাঝি’র নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। গুরুত্বর আহত স্কুলছাত্রী ঝর্ণা রায় (১৫) মা সশিবালা (৪০), ছোট ভাই গোপাল (১০) ও শংকরকে (১৮ মাস) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামে রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামের ধলু চন্দ্র রায়ের মেয়ে ঝর্ণা রায় কোচাশহর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বখাটে মিলন চন্দ্র মাঝি (২৪) একই গ্রামের মোগলা চন্দ্রের ছেলে। খবর পেয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, শারীরিক জখম নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন স্কুলছাত্রী ঝর্ণা রায় তার মা সশিবালা ও তার ছোট দুই ভাই গোপাল ও শংকর। হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঝর্ণার মা সশিবালা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝর্ণা রায়কে মিলন চন্দ্র প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে স্কুল যাওয়া আসার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। কিন্তু বরাবরেই ঝর্ণা তার প্রস্তাব প্রত্যাক্ষাণ করে। রবিবার দুপুরে ঝর্ণার মা বিষয়টি মিলন চন্দ্রের পরিবারকে জানিয়ে প্রতিবাদ করেন। এতে মিলন চন্দ্র ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে মিলন চন্দ্র তার সহযোগী নিমাই, চন্দ্র, লব চন্দ্র, পলানু, সুমন, শিপন, বিকাশ, ভেদা, বাচ্চুসহ ১০-১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালান। এসময় তারা ঝর্ণা, ছোট ছেলে গোপাল ও শংকরসহ আমাকে কুপিয়ে জখম করেন। এরপর ঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে চলে চলে যায় তারা। পরে তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে। ঝর্ণার বাবা ধলু চন্দ্র জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ীতে ছিলেন না। খবর পেয়ে বাড়ীতে এসে আহত স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু মিলন ও তার সহযোগীরা আবারও সিএনসি পথরোধ করে মারপিট করেন। তিনি আরও জানান, ‘হাসপাতালে থাকা অবস্থায় রবিবার রাতেই থানা পুলিশ এসে ঘটনা জেনে গেছেন। তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি’।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সজিব কুমার সরকার জানান, আহত ঝর্ণা তার মা সশিবালা ও ছোট দুই ভাইয়ের শরীরের একাধিক জখম রয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে জখমের পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহাবুব জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার এ ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। তবে প্রেমের প্রস্তাব না নাকি অন্য কোন বিবাদে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করা হবে। তবে দুপর ১টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত মিলন ও তার সহযোগীদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন