অনলাইন ডেস্ক : দুদিনের টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে এবং গাছের চাপায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। উদ্ধার কাজ চলছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ভোরে বান্দরবান শহরের লেমু ঝিড়ি পাড়া, কালাঘাটা ও ক্যচিংঘাটা এলাকায় পাহাড় ধসে তিন ভাইবোনসহ আটজন নিহত হয়েছেন। তিন ভাইবোনেরা হল- শুভ বড়ুয়া (৮), মিঠু বড়ুয়া (৬) ও লতা বড়ুয়া (৫) নামে তিন ভাইবোন। এসময় গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের বাবা লাল মোহন বড়ুয়া।
কালাঘাটার কবরস্থান এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়েন রেবা ত্রিপুরা (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় আহত হন বীর বাহাদুর ত্রিপুরা, প্রসেন ত্রিপুরা ও সূর্য চাকমা নামে তিনজন। নিহত অন্য দুইজনের পরিচয় জানা যায়নি।
পাহাড় ধসে এবং গাছচাপায় রাঙ্গামাটিতে ২৩ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে সেনাবাহিনীর তিনজন সৈনিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার। তারা মানিকছড়ি ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি শহরে ১৬ জনের এবং রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোরে সেনাবাহিনীর মানিকছড়ি ক্যাম্পের একটি ভবনের ওপর পাহাড় ধসে পড়লে মেজর মাহফুজ ও ক্যাপ্টেন তানভিরের মৃত্যু হয়। এসময় আহত হন সৈনিক ফিরোজ, সেলিম ও মোজাম্মেল।
অন্য যাদের নাম জানা গেছে তারা হল- রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদি এলাকার নুড়িয়া আক্তার, আইয়ুস মল্লিক, রুমা আক্তার, অমিত চাকমা, হাজেরা বেগম, লিটন মল্লিক, চুমকি দাস, সোনালী চাকমা, কাপ্তাই উপজেলার কারিগরপাড়ার নিকি মারমা ও অনুচিং মারমার নাম জানা গেছে।
মঙ্গলবার ভোরে চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি কানগুনিয়া এলাকায় পাহাড় ধসে পাঁচজন ও হালিশহর উপজেলার ফইল্লাতলী বাজার এলাকায় দেয়াল ধসে একজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
পাহাড় ধসে নিহতরা হলেন-ওই এলাকার আজগরের মেয়ে মাহি আক্তার (৩), চি চাও খিয়াংয়ের স্ত্রী মোখাও খিয়াং (৫০), খাই লাও খিয়াংয়ের মেয়ে মি মাও খিয়াং (১৩), চি লাও খিয়াংয়ের মেয়ে খেও চাপ খিয়াং (১০)। আহতরা হলেন চেইন খিয়াং ও ছিলাও খিয়াং।
এছাড়া ঝড়ে ফইল্লাতলী বাজার এলাকার একটি বাড়ির দেয়াল ধসে মোহাম্মদ হানিফ (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ সময় আহত আরো পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অব্যাহত বর্ষণে ভোররাতে বাজালিয়ায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বর্ষণে বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের বাজালিয়া, রাঙামাটি সড়কের পুলপাড়া বেইলি ব্রিজ তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড় ধসে রুমা উপজেলার সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে দুদিন ধরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন