মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ফুরফুরায় বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য-শান্তি কামনায় আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কোলকাতা থেকে আবু হেনা মুক্তি : ফুরফুরা দরবার শরীফের ১২৫তম ঈছালে ছাওয়াব গতকাল মঙ্গলবার ফজর বাদ অশ্রæসিক্ত আমিন আমিন ধ্বনিতে আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে। কোলকাতার হুগলী জেলার অদূরে ফুরফরার ময়দানে বিশ্ব মুসলিম উম্মার ঐক্য শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে শেষ হলো এই পবিত্র মিলন মেলা।
গত শনিবার থেকে আখেরী মোনাজাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মোজাদ্দেদে জামান হযরত আবু বক্কর সিদ্দিকী (রহ.)-এর নসিয়াত অনুযায়ী ধর্মপ্রাণ লাখো লাখো মুসল্লি ও অনুসারিদের ঢল নামে। এ উপলক্ষে ফুরফরাকে নতুন করে সাজানো হয়। বিশাল চটের প্যান্ডেলের নিচে দেশ বিদেশের মুসল্লি ও তাবলিগ অনুসারি দলের সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে ফুরফরার ময়দানে আসেন। সারা জাহানের মুসলমানদের সুখ, শান্তি, কল্যাণ, অগ্রগতি, হেদায়েত, সমৃদ্ধি, ভ্রাতিত্ববোধ কামনা করে আখেরী মোনাজাত করা হয়। এতে বিশ্বের ২০টি দেশের প্রায় ৬ হাজার বিদেশী অতিথিসহ প্রায় ২০-২২ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষ শরীক হন বলে ধারণা করা হয়। ২০টি প্রবেশ পথে সব ধরনের নাশকতা এড়াতে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছিল। গত শনিবার ফজর নামাজের পর আম’বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের ইছালে সাওয়াবের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ ওয়াক্ত নামাজের পরে ময়দানের ভেতরে অবস্থানকারী মুসল্লিদের উদ্দেশে ঈছালে ছাওয়াবের শীর্ষ মুরব্বীরা বয়ান করেন। পরবর্তীতে বয়ান গুলো বাংলা, আরবি, ফারসী, মালে, ইংরেজীসহ মোট ৭টি ভাষায় তরজমা করা হয়।
আখেরী মোনাজাতে বলা হয়, হে আল্লাহ সারা দুনিয়ার মুসলমানদের কবুল কর। হে আল্লাহ সকল মুসলমানদের হেদায়েত নসিব কর। এ আল্লাহ সারা বিশ্বে শান্তি বর্ষিত কর। হে আল্লাহ সকল ফুরফরার জাকেরীনদের কবুল কর। হে আল্লাহ সকল মুসলমানদের হেফাজত কর। হে আল্লাহ ঈসালে ছাওয়াব আয়োজনকারীদের কবুল কর। তাদের বেহেস্ত নসিব কর। হে আল্লাহ সকলকে ঈমানদার বানাইয়ে দাও। হে আল্লাহ ইসলামের দাওয়াতকারীদের কবুল কর। হে আল্লাহ আমাদের সকলকে মাফ করে দাও। হে আল্লাহ পৃথিবীর সকল নাস্তিক্যবাদীদের হেদায়েদ দাও। হে আল্লাহ মোনাজাতে সকল হাত উঠানোওয়ালাদের কবুল কর। হে আল্লাহ সকল হাত উঠানোওয়ালাদের মাফ করে দাও। হে আল্লাহ সকল হাত উঠানোওয়ালাদের বেহেস্ত নসিব কর।
বহু কাঙ্খিত এই আখেরি মোনাজাতে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে রহমত ও হেদায়েত প্রার্থনা করেছেন। নিজ নিজ গুনাহ্ মাফ ও আত্মশুদ্ধি চেয়েছেন। এ সময় মহান আল্লাহ পাকের অশেষ মহিমায় আবেগ-আপ্লুত লাখো মুসল্লির কণ্ঠে উচ্চারিত ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে ফুরফরার ময়দান। অশ্রæসিক্ত নয়নে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে পড়েন অনেক মুসল্লি। আখেরি মোনাজাতকালে গোটা ঈছালে ছাওয়াব ময়দানে যেন এক পুণ্যময় ভূমিতে পরিণত হয়।
মোনাজাতের আগে বক্তারা বয়ানে বলেন, দুনিয়ার চেয়ে আখেরাতের প্রতি আমাদের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। দুনিয়ার জিন্দেগীর চেয়ে আখেরাতের জিন্দেগী হলো স্থায়ী। তাই আমাদের ঈমানকে শক্তিশালী করে আখেরাতের জিন্দেগীর দিকে ধাবিত হতে হবে। আল্লাহর কাছে কান্না-কাটি করে ক্ষমা চেয়ে পাপমুক্ত হতে হবে। মোনাজাতের সময় গোটা ফুরফরা ময়দান আল্লাহ-আল্লাহ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন