স্টাফ রিপোটার : বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক নারী আলোকিত নারী। দেশের সব শ্রেণী ও পেশার নারীদের অবদানের জন্য বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশে নারীর অর্জন ফলপ্রসূ। এই অবস্থান শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর দৃশ্যমান উপস্থিতি ও সফলতা আমরা দেখতে পাচ্ছি।
গতকাল (বুধবার) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট ও ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত তরুণ প্রজন্মের অঙ্গীকার : ২০৩০ জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে ৫০:৫০ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন। স্পিকার বলেন, জেন্ডার সমতা আনয়নে কোন জায়গাটিতে পরিবর্তন আনা দরকার সে জায়গাটি চিহ্নিত করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে নারীর ওপরে ওঠার সিঁড়িগুলো সুসংহত করতে হবে। তাছাড়া অর্জিত চ্যালেঞ্জগুলো যাতে সুসংহত হয় সে বিষয়গুলোও নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, নারী সমতার জন্য লড়াই সংগ্রাম দীর্ঘদিনের। নারী সমতার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে সেগুলো একদিনের অর্জন নয়, দীর্ঘদিন সংগ্রামের ফসল। তিনি যে কোনো অর্জনের জন্য শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, কেউ অধিকার দেবে না। বরং নারীদের নিজেদের অধিকার নিজেদের আদায় করে নিতে হবে। এ জন্য নারীদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে সমাজের সকল বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি নারীদের আত্মবিশ্বাস অটুট রেখে কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে নিজেদের এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। স্পিকার বলেন, সংবিধান নারী সমতার অন্যতম ভিত্তি। এর ওপর দাঁড়িয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অনেক কাজ করছেন। তবুও নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নারীর জন্য যথেষ্ট সুযোগ উন্মুক্ত করতে হবে। এ জন্য নারীর শিক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। রঞ্জন কর্মকারের সঞ্চালনায় ও ড. মাহবুবা নাসরিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. নাসরিন আহমেদ, অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান, কাজী রিয়াজুল হক, মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, চন্দন জেড গোমেজ, রেখা সাহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
এদিকে গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার মিজ্ এলিসন ব্লেক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে তারা দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কসহ আসন্ন সিপিএ সম্মেলন, সিপিএ ইয়ুথ রোড শো, নারী শিক্ষা, জেন্ডার সমতা, নারী ক্ষমতায়ন, বাল্যবিবাহ, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশী জনগণের অবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
সাক্ষাৎকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বলেন, গত ২ মার্চ, ২০১৬ কমনওয়েলথ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে ‘সিপিএ রোড শো অন পার্লামেন্টারি ডেমোক্র্যাসি’ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এটি কমনওয়েলথের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশসমূহে চলবে। হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাজ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক ঐতিহাসিক। তিনি অর্থনীতি, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন