শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

শিক্ষা জাতীয়করণ কবে হবে?

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম


আলী এরশাদ হোসেন আজাদ
আমদের সবারই জানা আছে, শিক্ষাক্ষেত্রে সাংবিধানিক দায় হলো সবার সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ। অথচ পক্ষপাতদুষ্ট ও খÐিত জাতীয়করণের দোলাচালে চলছে অস্থিরতা। জাতীয়করণের দাবিতে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু, আদালতে রিট বা এমপিওভুক্তির জন্য অনশন কাম্য নয়। মানুষ গড়ার কারিগরদের এমপিওভুক্তির নামে দেওয়া হয় ‘অনুদান’। কাজেই, শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষকদের পেশাগত বঞ্চনার অবসানে দেশের সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ জরুরি।
প্রবল জনশ্রæতি বাতাসে ঘুরপাক খাচ্ছে, ২০১৯’র মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হবে। কিন্তু এমন আকাক্সক্ষার প্রনিধানযোগ্য ভিত্তি কোথায়? অন্যদিকে শিক্ষকের জীবনমানের উন্নতি ছাড়া শিক্ষার উন্নয়ন অসম্ভব। এজন্যই সর্বসম্মত জাতীয় গণদাবিÑ ‘এক ঘোষণায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ’।
বলতে দ্বিধা নেই, আমাদের দেশে মানুষগড়ার কারিগরদের নিয়ে কারো যেন টেনশন নেই! এমপিওভুক্তগণ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ও উৎসব ভাতা পান না। তারা পদোন্নতি, সেচ্ছাঅবসর, বদলি সুবিধাসহ অসংখ্য বঞ্চনার শিকার। এমপিওভুক্তগণ পাননি বৈশাখীভাতা ও বার্ষিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সুবিধা ! নতুন বেতনস্কেলে সরকারিগণ ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি সুবিধা পেয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু এমপিওভুক্তগণের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অনিশ্চয়তায় অন্ধকারেই রয়েছে। এমপিওভুক্ত কেউই পদমর্যাদা অনুযায়ী বাড়িভাড়া পান না। বরং বাড়িভাড়া পান ১০০০ টাকা, চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা, যা নিতান্তই অপ্রতুল। একটি ‘জাতীয়লজ্জা’ বেসরকারি শিক্ষকবৃন্দই সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র পেশাজীবী যারা সিকিভাগ (২৫ শতাংশ) উৎসবভাতা পান।
অভিন্ন সিলেবাসে পাঠদানকারী শিক্ষকদের বেশিরভাগই বেসরকারি! এমন পটভূমিতে শিক্ষকসমাজের অন্যতম চাওয়া: বিচ্ছিন্ন ও খÐিতভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পরিবর্তে স্বচ্ছ, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে ‘এক ঘোষণায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ’। তথাকথিত ‘শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো’র কল্পনা বাদ দিয়ে যা আছে, যেমন আছে তাকে অব্যাহত রেখে ক্রমশ তার মানোন্নয়ন, ভিত্তি সুদৃঢ়করণ বেশি জরুরি। কেননা, ‘ঢেলে সাজানো’র কথা বলে শুধু ঢালা হয় সাজানো হয় না!
‘এতো ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গ ভরা’ উক্তির অনুপম দৃষ্টান্ত হলো, বেসরকারি শিক্ষকদের অনৈক্য। সম্ভবত পেশাগত দাবিতে সবচেয়ে অনৈক্যের খেসারত দিচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষকগণ। দুঃখজনক হলেও সত্য, শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণ না হবার জন্য দায়ী কেন্দ্রে শিক্ষক সংগঠনগুলোর দলীয় লেজুড়বৃত্তি। ফলে কোনো দাবির পেছনে যৌক্তিকতার চেয়ে বিবেচনায় থাকে দাবিটি কারা করেছে? সঙ্গে চলে আসে দু’ধরনের ব্যাখ্যা ও অবস্থান। তখন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিগুলো হয়ে যায় রাজনৈতিক। তবে আশার কথা, বর্তমানে শিক্ষক সংগঠনগুলোর মধ্যে ‘এক ঘোষণায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ’ বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রায় অভিন্ন। কেননা, ‘দল যার যার শিক্ষকস্বার্থে সব শিক্ষক একাকার’। শিক্ষকতার মহানব্রতের গর্বিত অংশীদার হিসেবে আমি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে মনে করি, পেশাগত প্রাণের দাবি আদায়ে নেতিবাচক কর্মসূচি বা কোনো রূঢ় বাস্তবতার দিকে আমাদের নেতৃবৃন্দ যাবেন না বরং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলে শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ, গাজীপুর

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Nazrul ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১১:১৯ এএম says : 1
বিষয়টি খুবই জরুরি
Total Reply(0)
শহীদুল ৩১ জুলাই, ২০১৭, ৭:৩৩ পিএম says : 0
অনেক গুরুত্ব পূর্ন/বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত
Total Reply(0)
zahirul islam ৬ আগস্ট, ২০১৭, ৮:০২ পিএম says : 0
ধন্যবাদ সরকার জাতীয় করনে আন্তুরিক শিক্ষক সমিতি একতাব্দদ হতে হবে।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন