স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবারের মতো যথাযোগ্য মর্যাদায় এবছরও পালিত হয়েছে বাংলাদেশে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, খুলনার দণি ডিহি এবং সরকারি ও বেসরকারি নানা আয়োজনে পালন করেছে তার মৃত্যুদিন। ঢাকায় বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, ছায়ানট, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে। এ উপলক্ষে দেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি রোববার বিকাল চারটায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিশেষজ্ঞ বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে ‘পরিবেশ, নির্মাণসংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট স্থপতি, রবীন্দ্র গবেষক ও পরিবেশবিদ অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইব্রাহিম হোসেন খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস প্রফেসর আনিসুজ্জমান। পরে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া। এ ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থা, শিশু একাডেমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
৮০ বছরের জীবনসাধনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জন্ম এবং মৃত্যুকে একাকার করে তুলেছিলেন অমরতার শাশ্বত বার্তায়। কলকাতায় জন্ম হলেও পৈতৃক জমিদারি দেখভালের জন্য তিনি বাংলাদেশে এসেছেন বহুবার। কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসরে জমিদারবাড়ি আজও তার স্মৃতিচিহ্ন বহন করছে। বাংলাদেশের কৃষির সাথে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের আত্মিক সম্পর্ক। সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে লিখেছেন প্রচুর। তার কবিতা, গান ও গল্প ছুঁয়ে গেছে পাঠকহৃদয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে নিজস্ব ভঙিমায় উপস্থাপন করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তিনিই একমাত্র কবি, যিনি তিনটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা (বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা)।
১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৮ মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলা ১৩৪৮ সনের কলকাতার জোড়াসাঁকোয় বর্ষণসিক্ত শ্রাবণে তিনি পরলোকগমন করেন। ‘গীতাঞ্জলি’ লিখে ১৯১৩ সালে জয় করেছিলেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। ১৯১৫ সালে তিনি ব্রিটিশ সরকারের ‘নাইট’ উপাধি লাভ করেন। তবে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ওই উপাধি ত্যাগ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন