মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশ-বিদেশে তোলপাড়

সালমান শাহ মৃত্যু রহস্য

| প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে -রুবি : নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিয়ে আবারো তৎপর পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা নিয়ে পুলিশ তৎপর হয়েছে আবার। সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে, এ দাবি করে প্রবাসী বাংলাদেশি মহিলা রাবেয়া সুলতানা রুবি ভিডিও প্রকাশের পর এ নিয়ে দেশে-বিদেশে তোলপাড় চলছে। নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে সর্বত্র। পুলিশও এখন ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ওই মহিলা সালমান শাহর মা নীলা চেীধুরীর বান্ধবী। গতকাল বাংলাদেশ থেকে পুলিশ ও সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে রুবি বলেছেন, এ হত্যাকান্ডের সম্পর্কে তার কানাডা প্রবাসী ছেলেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানে। তিনি বলেছেন, পুলিশ চাইলে কারা সালমান শাহকে হত্যা করেছে; তা জানাতে রাজি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর বিশেষ পুলিশ সুপার (মেট্রো) আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে চলছে তদন্ত কার্যক্রম। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী রাবেয়া সুলতানা রুবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করার পর পুলিশ নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে। রুবি বলেছেন, সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যার সাথে তার ভাই (নিখোঁজ) ও স্বামী, সালমান শাহর স্ত্রী, আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও চিত্র জগতে অভিনেতা ডন জড়িত। এদের পুলিশের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এই নিয়ে তোলপাড় চলছে সারা দেশে। ভিডিও বার্তায় সালমানের মৃত্যুর নতুন রহস্যের দুয়ার খুলে দিলেন রুবি। পাশাপাশি হচ্ছে সমালোচনাও। অনেকেই রুবির হঠাৎ মুখ খোলায় এর পেছনে তার কোনো ব্যক্তি উদ্দেশ্য আছে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। রুবি জানান, তার সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই আমেরিকায় গিয়ে পুলিশ তার সঙ্গে দেখা করবে। তার জবানবন্দী নেবে। তারপর যদি বাংলাদেশের আইন মনে করে সালমানের খুনিদের শাস্তি দেয়া উচিত তবে তারা দেবে।
সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর সঙ্গেও তার কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। ফেসবুক থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন নীলা। তাদের খুব শিগগিরই দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ মামলায় রুবিও আসামি। আর এ জন্য রুবি নানা সময় এই মামলা নিয়ে সমালোচনা করে ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তার দাবি ছিল, সালমান আত্মহত্যাই করেছেন। তাকে মামলায় জড়ানোর জন্য একসময়ের বান্ধবী সালমানের মা নীলা চৌধুরীর সমালোচনা করে নানা কটাক্ষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন ফেসবুকে। গেল তিন মাস আগেও তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করে নীলা চৌধুরী ও সালমান শাহকে নিয়ে অনেক বাজে কথা বলেছেন। তবে হঠাৎ কী এমন হলো যে সেই রুবিই ভিডিও বার্তায় জানালেন, সালমানকে খুন করা হয়েছিল এবং সেই খুনের সঙ্গে জড়িত তারই চাইনিজ স্বামী, সালমানের স্ত্রীর সামিরা ও তার পরিবার।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এটা আমাদের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। আগে আমাদের কাছে তেমন কোনো সূত্র ছিল না। কিন্তু ওই নারী দেশে নেই। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে ভিডিওটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আলামতের অভাবে মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা যাচ্ছে না। সালমান শাহ হত্যা মামলায় কয়েক পর্যায়ে তদন্ত হয়েছে। অনেক আলামত নষ্ট হয়েছে। এ কারণে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে এ ভিডিওতে কিছুটা হলেও সঙ্কট ঘুঁচবে। অপেক্ষা করুন, সময়ই সব বলে দেবে।
গত সোমবার সালমান শাহর বিউটিশিয়ান রাবেয়া সুলতানা রুবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওতে রাবেয়া সুলতানা রুবি বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি, তাকে খুন করা হয়েছে। রুবি জানান, সালমান শাহকে খুনে জড়িত ছিলেন তার স্বামী চীনা নাগরিক চ্যান লিং। যিনি চ্যান ওরফে জন চ্যান নামে বাংলাদেশে পরিচিত। ধানমন্ডির সাংহাই রেস্টুরেন্টের মালিক তিনি। চীনাদের দিয়ে সালমান শাহকে খুন করানো হয়। এতে জড়িত ছিল সালমান শাহর স্ত্রী সামিরার পরিবারও। প্রয়োজনে তিনি (রুবি) আদালতে সাক্ষী দিতেও প্রস্তুত।
রাবেয়া সুলতানা রুবি এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। তিনি সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৭ নম্বর আসামি।
গতকাল (মঙ্গলবার) যোগাযোগ করে হঠাৎ কেন এমন কথা বলছেন জানতে চাইলে রাবেয়া সুলতানা রুবি বলেছেন, ‘হঠাৎ মুখ খুলেছি, কারণ আমিও হঠাৎ করেই জানতে পেরেছি যে, সালমানকে খুন করা হয়েছিল। এতদিন জেনে আসছি ও আত্মহত্যা করেছে। অকারণে আমার নামে খুনের মামলা দেয়ায় আমি নীলা ভাবীর (সালমানের মা) উপর বিরক্ত ছিলাম। কিন্তু গেল মাসে আমি আমার বড় পুত্র ভিকির কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়ে সেই সূত্রে অনেক কিছু জেনে নিজেই অবাক হয়ে গেছি। কেননা, আমি কোনোদিন ভাবিনি সালমান খুন হয়েছে, আর তার খুনের সঙ্গে আমার স্বামী ও ভাই জড়িত এবং সামিরা ও তার পরিবার সেখানে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘সব তথ্য শুনে আমার মনে হয়েছে, এই বিষয়টি গোপন রাখা ঠিক হবে না। সালমান ও তার পরিবারের সঙ্গে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে। এর শোধ নেয়া দরকার। তাই ভিডিও বার্তায় বিষয়টি জানিয়েছি। আমি ভালো লিখতে পারি না। কিন্তু ভিডিও প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে আমার। তাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস না দিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছি। আমি জানতাম না, সালমান এতটা জনপ্রিয় ছিল বাংলাদেশের মানুষের কাছে এবং ২০ বছর পরও মানুষ তাকে এভাবে মনে রেখেছে। খুবই অবাক হয়েছি। আফসোস হচ্ছে, এমন একটা জনপ্রিয় নায়ককে এভাবে অকালে সরিয়ে দেয়া হলো।’
কী তথ্য পেয়েছেন ছেলের কাছ থেকে? এ প্রশ্নের জবাবে রুবি বলেন, ‘বেশ কয়েকমাস আগে আমার ছেলে ভিকি আমাকে হঠাৎ বলল, মা তোমার সঙ্গে আমার জরুরি একটা গোপন কথা আছে। একদিন তোমাকে বলব। তারপর সেই প্রসঙ্গটি ভুলে যাই আমি ও আমার ছেলে। ভিকি কানাডার টরন্টোতে থাকে। গেল মাসে আমি ওর ওখানে বেড়াতে যাই। তখন প্রসঙ্গটি আবার উঠে।
সে আমাকে জানায়, যেদিন সালমান শাহ মারা গেল সেদিন একটা কাপড়ের পুটলি ভিকিকে দিয়েছিল সামিরা। বলেছিল গোপনে কোথাও ফেলে দিয়ে আসার জন্য। কী ছিল সেই পুটলিতে তা আর ভিকি খুলে দেখেনি। পরে যখন জানতে পারে, সালমানের মৃত্যু নিয়ে রহস্য, তখন তার মনে সন্দেহ তৈরি হয়। কিন্তু এই বিষয়টা সে কারো সঙ্গে শেয়ার করেনি। তার মুখে এই কথাটা শুনে আমারও অনেক সন্দেহ হয়। ধীরে ধীরে এই বিষয়টা নিয়ে আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলি। সে আবার সামিরার মামা।
এই তথ্য জানতে চেয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমি অনেক কিছুই জানতে পারি। আমার ছোট ভাইও খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। সবকিছুই এবার প্রকাশ্যে আনতে চাইছি। আমার উপর নীলা ভাবী ও মানুষজনের অকারণ রোষাণল আমি কেন সইবো।’
তিনি আরো জানান, ‘সালমান খুনের সঙ্গে আরো অনেকেই জড়িত আছেন। এখনো এই খুনের রহস্য উদ্ধার করা সম্ভব। সালমান খুনের এসব তথ্য জানার পর আমার একটি কথা বারবার মনে পড়ছে। সালমান একবার আমার বিউটি পার্লারে এসেছিল। তখন সে কথায় কথায় বিরক্তি নিয়ে বলেছিল- ‘রুবি আন্টি, আমি কখনো কুকুর পাললে তার নাম দেবো ডন।’
এই ডন অভিনেতা ডন কি-না জানতে চাইলে রুবি বলেন, ‘এই ডন কোন ডন তা আমি জানি না। তবে অভিনেতা ডন নন বলেই মনে হয়। কারণ অভিনেতা ডনের সঙ্গে তার ভালো বন্ধুত্ব ছিল বলে শুনেছিলাম। হয়তো অন্য কোনো ডনকে সে ইঙ্গিত করেছে। তার কথার প্রেক্ষিতে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, কোনো এক ডনের উপর সে ক্ষুব্ধ।’
অবান্তর তথ্য দিয়ে ভিডিও প্রকাশ করায় সালমান শাহের শ্বশুর শফিকুল হক হীরা তাকে পাগল দাবি করেছেন গণমাধ্যমে। এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘হীরা ভাই নিজে হয়তো পাগল হতে পারেন, আমি নই। আমি তো প্রমাণ দিয়েছি যে, আমি পাগল নই। আমেরিকাবাসী পাগলকে হোটেল ভাড়া দেয় না। আর উনি কেমন করে এই কথা বলেন যে, আমার ডিভোর্স হয়েছে? উনার পরিবারের সঙ্গে তো আমার কোনো যোগাযোগই নেই।
উনার মেয়ে সামিরার সঙ্গে কয়েক মাস আগে ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল। সামিরা ওর স্বামীর নামে আইডি দিয়ে যোগাযোগ করেছিল। তবে উনি কেমন করে জানলেন আমার ডিভোর্সের খবর। তার মতো সম্মানী লোক মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন, মানা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘আপাতত এটুকুই আমি বলব। বাকি যা বলার আইনের কাছে স্বীকারোক্তি দেবো।’
পিবিআই থেকে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর। রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনায় সে সময় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এ অভিযোগ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চ‚ড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। অবশ্য সিআইডির প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহর মা নীলুফার চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে নারাজির আবেদন করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন মিলে সালমান শাহকে হত্যা করতে পারে। একসময় মামলাটি তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক র‌্যাব মামলাটি তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপরই মামলাটি পিবিআইকে দেয়া হয় তদন্তের জন্য।
এদিকে সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি রাবেয়া সুলতানা রুবি প্রায় তিন মাস আগে তাকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আজ তিনি বিপদে পড়ে সালমান শাহর মৃত্যুর সত্য ঘটনা বলছেন। এটি আল্লাহর বিচার। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সালমান শাহর মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে আমি লন্ডন থেকে দেশে আসি। যদিও দুর্ভাগ্যবশত ঢাকায় ফিরলেও সালমান শাহর সাথে দেখা হয় না। মৃত্যুর আগের দিন ৫ তারিখ রাতে বাসার ল্যান্ডফোনে আমাকে ফোন দিয়ে বলে, মামা তুমি নাকি সকালে ঢাকায় আসছ? আমি বললাম, হ্যাঁ, তোমার ছোট খালা যাচ্ছে- ওদের সাথে আমিও যাব। সে আমাকে বলল- মামা, কালকে জুমাবার, ফার্স্ট ফ্লাইটে সিলেট আসছি, এসে জুমার নামাজ পড়ব। এক সপ্তাহ সিলেট থাকব, রিলাক্স করব। আর একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ঘুম থেকে উঠে সামিরাকে ডিভোর্স দেবো। ওটাই ছিল আমার সাথে তার শেষ কথা।’ তিনি বলেন, ‘পরের দিন সকালে অপেক্ষা করতে করতে সাড়ে এগারোটা-বারোটার পরে আমি জুমার নামাজের জন্য মসজিদের দিকে যাই। কাজের বুয়াকে বলে যাই, ইমন (সালমান) আসলে যেন সে মসজিদে চলে আসে। মসজিদের জুমার নামাজের আগেই আমাকে লোকজন ডাকাডাকি শুরু করে। আমি নামাজ পড়ে বের হওয়ার পরে সালমানের মৃত্যুর খবর পাই।’
সালমান শাহর মামা আলমগীর আরো বলেন, রুবি সালমান হত্যা মামলার আসামি। ও আমাদের পরিবারের কেউ নয়। আজ থেকে তিন-চার মাস আগে সে আমাকে ফেসবুকে গালিগালাজ করে। আমি কোন রিপ্লাই দেইনি। আল্লাহর বিচার ধীরে ধীরে হয়। সবুর যে করে তাকে আল্লাহ দেখে। আমরা সবুর করেছি। সে নিজেই সালমানের মৃত্যুর বিষয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছে। আর কোনো সাক্ষীর কোনো প্রয়োজন নেই। এখন সে নিজেই রাজসাক্ষী। আমরা কেস চালিয়ে যাচ্ছি দেখি কী হয়।’
ফেসবুকে রুবির ভাইরাল ভিডিও কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, তা জানতে চাইলে সালমান শাহর মামা বলেন, ‘আমার প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। সালমান শাহর নাম কামাল বললে আমরা কেউ বিশ্বাস করব? করব না। সালমান শাহর মৃথ্যুর ১০ দিন পরে যখন ঢাকায় যাই তখন তার অ্যাপার্টমেন্ট খোলা হয়। সেদিন ডিবি ডিসি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সামিরার বাবা, মা ও সামিরা ছিল। সবার সামনেই সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলো। সেগুলোর আলামত কই? আমার সামনে সামিরার কোনো ভালো শাড়ি, গহনা পাওয়া যায়নি। যে রুমে সালমানের মৃতদেহ ঝুলছিল সেই রুমে রাতে পাশের বাসার লোকজন ধস্তাধস্তি-মারামারি দেখে। তারা ভেবেছিল, স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে গন্ডগোল হচ্ছে। সেই আলামতগুলো কই?
তিনি বলেন, ‘সালমানে ভক্তের কাছে ও দেশবাসীর কাছে আমার একটি প্রশ্ন- যদি কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে আত্মহত্যা করেছে, তবে সে কি কাজের বুয়া ডেকে, সুস্থ মস্তিস্কে দঁড়ি কেটে নিচে নামিয়ে তেল আর পানি দিয়ে শরীর ম্যাসেজ করবে? এরকম মহিলা বাংলাদেশে কয়জন আছে?
সাক্ষাৎকারে সালমান শাহর মামা ফেসবুকের মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করে সালমান শাহর মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য দেয়ায় রাবেয়া সুলতানা রুবিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
আলতাফ ৯ আগস্ট, ২০১৭, ২:৩৫ এএম says : 0
বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে তদন্ত হওয়া দরকার।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন