সম্প্রতি ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক চলচ্চিত্রের ‘মিঞা ভাই’ খ্যাত চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক বাংলা চলচ্চিত্রের রাজপুত্র সালমান শাহকে নিয়ে এক ভিডিও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি চিত্রনায়ক শাকিব খান ও সালমান শাহ সম্পর্কে কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সেই সাক্ষাৎকারের ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ফারুক বলেন, ‘সালমান শাহ কী? আহামরি কি সে এমন, এতো কথা বলো, কী সে… তোমার হাজারো সালমান শাহকে বিট করে দিচ্ছে আমাদের শাকিব। কোথায় নিয়ে চলে গেছে শাকিব। এগুলো ধরলে আমরা কিন্তু কথা বলতে পারি।’
সালমান শাহকে নিয়ে নায়ক ফারুকের এমন মন্তব্যের তিব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন সালমান শাহ ভক্ত ও চলচ্চিত্র প্রেমীরা।
এ ইস্যুতে সিনেমা বিষয়ক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট রহমান মতি লিখেন, ‘নায়ক ফারুক সালমান শাহ সম্পর্কে যা বলেছেন-'সালমান শাহ কি হয়ে গেছে! শাকিব আজকে কোথায় চলে গেছে।' তার পেছনে ক্ষোভ থাকতে পারে। 'সুজন সখি' যখন রিমেক হয়েছিল উনি রাজি ছিলেন না। সালমান শাহ-শাবনূর জুটির 'রঙিন সুজন সখি' ছবিও তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিল। এটা একটা কারণ। মানুষ সবকিছু ভালোভাবে নাও নিতে পারে। এর বাইরেও কোনো কারণ থাকতে পারে, থাকতে পারে বয়সের প্রভাবও। উনি তো সালমানের সাথে ছবিও করেছেন 'জীবন সংসার'-এ। সালমানের জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া এখনও। শাকিব খান নিজেও সালমানের ভক্ত। ইন্টারভিউতে একাধিকবার বলেছিলো, সালমানের ছবি ফার্স্ট শো-ই দেখত সিনেমা হলে। সালমান অল্প সময়ে যে ক্যারিয়ার, জনপ্রিয়তা, প্রভাব, ফ্যাশন এসব রেখে গেছে ঢালিউডে সেটা ইতিহাস। আর হবে না। সো ফারুক সাহেব রাগের মাথায় সালমানকে ছোট করে যা বলেছেন, সেটাকে আমলে নেয়ার কিছু নেই। উনি নিজেও জানেন সালমান কি ছিল যেহেতু তাঁর সাথে উনি কাজও করেছেন। আর সালমানকে ছাড়িয়ে যাবার মতো নায়ক কখনো হবেই না, কারণ হচ্ছে সালমান যেভাবে এসেছে আর চলে গেছে, এটা খুব কম নায়কের ভাগ্যে জোটে। বিষয়টা ক্ষণজন্মা প্রতিভার, এটা সবাই পায় না। ফারুক সাহেব নিজেও হয়তো তাঁর কথার ভুল বুঝবেন, তিনি কি বলেছেন। শাকিব বর্তমানে শীর্ষ নায়ক, কিন্তু দেশের সর্বমহলের দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এখনও নেই, কিন্তু সালমানের আছে। সালমান একটা আবেগ, ভালোবাসার নাম হয়ে গেছে। এখনও প্রতিবছর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে ট্রিট করা হয়। এটা এত সহজে আসে নি। অনেক কিংবদন্তি নায়ক থাকার পরেও সালমান বিশেষ কিছু। এটা বোঝার জন্য সেই ফিলিংসটা থাকতে হবে। যাদের নূন্যতম ভালো ছবি, মন্দ ছবি বোঝারই যোগ্যতা নেই, তারা যদি ফারুক সাহেবের কথা ধরে আনন্দে থাকে তাহলে চরম ভুল করবে। সালমান শাহ কিংবদন্তি, কাল থেকে কালে স্মরণীয় নায়ক। শাকিব খান বর্তমানে সেরা, সালমানের সাথে তাঁকে মেলানোটা অযৌক্তিক। যার যার জায়গায় সম্মানটা দিলে আর কোনো সমস্যা নেই। অতঃপর শান্তি।’
‘ফারুক সাহেবকে দিয়ে বুঝলাম কথাবার্তায় সচেতন না হলে কিরুপ অবস্থায় যেতে হয়। এর আগে শাকিব খানকে কটাক্ষ করে তার ভক্তদের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পড়েছেন। পাড়ার গুন্ডা থেকে অনেক কিছুই বলা হয়েছিলো। সম্প্রতি সালমান শাহকে নিয়ে বিরুপ কথা বলেছেন, তার ভক্তরা স্বাভাবিকভাবেই জ্বলবে। তবে এরা আরও এগিয়ে আজ দেখলাম গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হচ্ছে ফারুকের! ফারুক সাহেব কি দরকার, এখন এইসবে যাওয়া। আপনার যে কালজয়ী ছবিগুলো আছে সেইগুলো দিয়ে আপনার স্থান অনেক উর্ধ্বে, প্রচুর হিট ছবিও আছে, অভিনেতা হিসেবেও আপনি শ্রদ্ধাভাজন। এই বয়সে এইসবে জড়িয়ে কি লাভ আপনার! সাংসদ যখন হয়েছেন, ওখানেই মনোযোগ দেন। আপনি আমার একজন পছন্দের অভিনেতা। আপনার অভিনীত অনেক ছবিই পছন্দের তালিকায়। আপনার এই অসম্মান খুব খারাপ লাগছে।’ - লিখেছেন হৃদয় সাহা।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে চিত্রনায়ক কায়েস আরজু লিখেন, সালমান শাহ....বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের আবেগের নাম। আমি সেই সালমান শাহ নামক ধুমকেতুর একজন কলিজাওয়ালা ভক্ত। কথাবার্তা হুশ করে বলিয়েন আপনারা ! সাবধান !’
এমডি রাজিব হোসাইন লিখেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্রের একজন প্রবীণ অভিনেতার এমন ব্যক্তিগত ফ্রাস্ট্রেশন আর হিপোক্রেসি দেখে আমি অবাক! ......’
‘সাহেবের মাথা বিগড়ায়ে গেছে...’ - সিমিত রায় অন্তরের মন্তব্য।
শান্তু শারিনের প্রশ্ন, ‘প্রতিবাদটা কি তাহলে সব দিক থেকে শুরু হবে? আশা করছি, ফারুক সাহেব যদি নিজের ভুল বুঝতে পারেন। শাকিব নিজেও কখনও এমন কথা ভাববে না। সম্মানিত তারকা, কেন এই সব বলে সমালোচিত হোন?’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন