শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে সিলেট আওয়ামী লীগ

প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

খলিলুর রহমান : আগামী ২২ মার্চ সিলেটের সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইসব এলাকায় নির্বাচনের জন্য প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়াতে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে এক্ষেত্রে বিএনপির ছেড়ে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী বেশি হওয়াতে অনেকটা বিপাকে রয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে খাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের ১ম এবং ২য় ধাপের নির্বাচনে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে দল মনোনীত প্রার্থী লড়ছেন। তবে তাদের পাশাপাশি একই আদর্শের ১৩ জন রয়েছেন বিদ্রোহী হিসেবে। ভোটারদের প্রাথমিক জরিপে অনেক ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর জয়ের পাল্লায়ও এগিয়ে রয়েছেন। যদিও আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা মনে করেন, সরকারের উন্নয়নের ধারায় যোগ দিতে ভোটাররা তাদেরকেই নির্বাচিত করবেন। সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ১ম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউনিয়নের মধ্যে খাদিমপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আফসর আহমদ, টুলটিকর ইউনিয়নে জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি এস এম আলী হোসেন, জালালাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা মনফর আলী ও শামছুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন।
এদিকে, দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় শীর্ষ নেতারা মাঠে নেমেছেন। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ চৌধুরী, কৃষক লীগের উপদেষ্টা মোমিন চৌধুরী, শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সিলেট জেলা সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক এজাজ, সাধারণ সম্পাদক শামীম রশিদ চৌধুরীসহ দলের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতাদের প্রচারণাকে তোয়াক্কা করছে না তৃণমূল আওয়ামী লীগ। তারা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পিছনে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে। এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে বৈঠক করছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। স¤প্রতি সিলেট সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল মোছাব্বির আওয়ামী লীগের লোক নয় বলে অভিযোগ তুলেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। স¤প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক সভায় নেতাকর্মীরা এমন অভিযোগ তুলে বলেন, আব্দুল মোছাব্বিরের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার দায়ভার নিবেন না তারা। তবে আওয়ামী লীগের সমর্থকসহ কাউকে তারা বারণও করবে না আব্দুল মোছাব্বিরের প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে।
এমনকি তাকে ভোট দিতেও। তারা বলেন, ভোট দেওয়া ও প্রচার কাজে অংশ নেওয়া প্রত্যেকের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপরই তা নির্ভর করে। সদর উপজেলার ৫নং টুলটিকর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল মোছাব্বিরকে নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। এ বিষয়টি নিয়ে ৮ মার্চ সংগঠনের কার্যালয়ে একসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচনা হয় নৌকা প্রতীক পাওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল মোছাব্বির আওয়ামী লীগের কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি বা আওয়ামী লীগের সদস্য পদও তার নেই। নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ তরমুজ আলী জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল মোছাব্বির আওয়ামী লীগের লোক নয়। এরপরও ৮ মার্চের সভার পর আমরা তার সাথে বসেছি। তাকে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরম পূরণ করতে বললে তিনি তা করেননি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে চাইলে তিনি বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গ ছেড়ে আসতে চান না। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মো. আলী হোসেন (আনারস প্রতীক) ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে রুস্তমপুর ইউনিয়নে আব্দুল মতিন, পূর্ব জাফলং ইউনিয়নে লুৎফুর রহমান লেবু ও আলীরগাঁও ইউনিয়নে আবুল কাশেম মো. আনোয়ার শাহাদত নামের তিন বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন-পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নে গেদা মিয়া, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নে ইলিয়াছুর রহমান, তেলিখাল ইউনিয়নে আব্দুল হক ও কাজী আব্দুল ওয়াদুদ আলফু, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নে ফরিদ উদ্দিন এবং দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নে এম. হান্নান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন