স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে নতুনভাবে বিএনপি ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপির এই ষড়যন্ত্রকে রুখতে দলের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে যারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে সহ্য করতে পারছে না, তারা সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এ ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আমাদের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে হেরে যাবে বলে তারা আগের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এখন তারা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছে। সরকার হটাতে নতুন নতুন ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অঘটন ঘটিয়ে ডিকবাজিতে চ্যাম্পিয়ন মওদুদ আহমদ আনন্দে মেতে উঠেছেন। মির্জা ফখরুল আপনি এত লাফালাফি করছেন কেন ? কারণটা কী? কারণ আট বছরে আট মিনিটের জন্যও আপনারা আন্দোলন করতে পারেননি। পারেননি কারণ, জনগণ আপনাদের সঙ্গে ছিল না। এতদিন যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখে দেখে তাদের সময় কাটত; এখন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছেন। যেন আদালত তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এরাই এতদিন বিদেশীদের কাছে নালিশ করেছেন যেন বিদেশীরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমি বলতে চাই, মির্জা ফখরুল সাহেবকে, আওয়ামী লীগ কখনও পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপির জন্ম হয়েছে বন্দুকের নল দিয়ে। পেছনের দরজা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। অন্ধকার আর ষড়যন্ত্রের পথ দিয়েই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। সেভাবেই ২০০১ সালের ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন করেছিলেন। আপনি আবার মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সেই ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন আবার হবে। সেই রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উড়ে যাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মওদুদ সাহেব জিয়াউর রহমানের সরকার থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, কারণ জিয়াউর রহমান ইংরেজি জানেন না; এই বলে। ভুলে গেছেন বিএনপির লোকেরা?
তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়ার সময় চট্টগ্রামে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত বেগম খালেদা জিয়া যখন কুমিল্লা হাসপাতালে, তখন মওদুদ সাহেব তাকে হাসপাতালে রেখে জেনারেল এরশাদের সরকারে যোগ দিয়েছেন। এই মওদুদ সাহেব একবার বিএনপি, একবার জাতীয় পার্টি আবার বিএনপি। কি করে তার পরামর্শ নেন খালেদা জিয়া? মওদুদ আহমদের অবৈধভাবে দখল করা বাড়ি মামলায় হেরে গেলে বলেন বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়; আবার বেগম জিয়ার বাড়ির মামলা হেরে গেলেও বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিমকোর্ট যখন রায় দিল, তখন মওদুদ আহমদ বলছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। এই হচ্ছে দলটির অবস্থা।
কাদের বলেন, আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। এই ষড়যন্ত্রের খুঁটি কোথায় আছে, তা আমরা জানি। এই খুুঁটি তারা আঁকড়ে ধরে আছে। জনগণের মাঝে তাদের কোনো অবস্থান নেই। তাই তারা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ইস্যু খোঁজে।
ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, সংগঠনের সুনামের ধারা বজায় রাখতে হবে। দল ভারী করার জন্য ছাত্রলীগে খারাপ লোক নেবে না। অনুপ্রবশেকারীদের ছাত্রলীগে স্থান নেই। আগাছামুক্ত, পরগাছামুক্ত ছাত্রলীগ গড়তে হবে। গুটি কয়েক খারাপ লোকের জন্য ছাত্রলীগের দুর্নাম হতে পারে না। খারাপদের বের করে দাও। এদের আমাদের প্রয়োজন নেই।
এ সময় তিনি বলেন, বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েও তরুণ সিদ্দিকের চোখের আলো আমরা রাখতে পারিনি। কিন্তু আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আছি। আমরা সিদ্দিকের পরিবারের সঙ্গে থাকব।
কাদের বলেন, আজ এই বৃষ্টি উপেক্ষা করে এত বড় জামায়েত। এতে প্রমাণ হয় তোমাদের সাহস আছে। তোমাদের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত হবে হবে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন