শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

তামাকপণ্যের প্যাকেটে সতর্কবাণী ১৯ মার্চ থেকে -স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী ১৯ মার্চ থেকে সকল তামাকপণ্যের প্যাকেটের উপরের ৫০ শতাংশেই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের একসাথে কাজ করা জরুরি বলে আলোচনা সভায় মত দেন তিনি।
গতকাল ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিএফকে))-এর সহযোগিতায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ফোরাম এগেইনেস্ট টোব্যাকো (উফাত), প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং গণমাধ্যম কর্মীদের নেটওয়ার্ক ‘এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স- আত্মা’র যৌথ আয়োজনে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘তামাকজনিত মৃত্যু রোধে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু, আবুল কালাম মো. আহ্সানুল হক চৌধুরী, কাজী রোজী কামরুন নাহার চৌধুরী, মানসের সভাপতি প্রফেসর ডা. অরূপ রতন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ নাটাবের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রফেসর ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী এবং প্রজ্ঞা’র সমন্বয়ক হাসান শাহরিয়ার।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর গুরুত্ব সারাবিশ্বে স্বীকৃত কারণ, একটি ছবি হাজার শব্দের চেয়ে অধিকতর কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক এক প্যাকেট সিগারেট ব্যবহারকারী একজন ধূমপায়ী সিগারেট কেনা ও ব্যবহার করার সময় দিনে কমপক্ষে ২০ বার, বছরে ৭ হাজার বার সিগারেটের প্যাকেটে ছাপানো ছবি দেখে থাকে। তাই স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এমন একটি কার্যকর এবং সরকারের জন্য সাশ্রয়ী পন্থা যা তামাক ব্যবহারের সময় প্রতিবারই ব্যবহারকারীকে তামাকের ক্ষতি সম্পর্কিত বার্তা প্রদান করতে থাকে।
তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ ও এর বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী আগামী ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখের মধ্যে সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটায় তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সম্পর্কিত রঙ্গিন ছবি ও লেখা সম্বলিত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা বাধ্যতামূলক রয়েছে। বাংলাদেশে এই উদ্যোগটির গুরুত্ব অনেক বেশি কারণ, এদেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ লেখা-পড়া জানেন না। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে তামাকের প্রচার প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকায় তামাক কোম্পানিগুলো তামাকপণ্যের মোড়ককে বিজ্ঞাপনের হাতিয়ায় হিসেবে ব্যবহার করে। তাই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হলে তাদের সেই ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্য অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ কারণেই সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের একেবারে শেষ প্রান্তে এসেও তামাক কোম্পানিগুলো রাষ্ট্রের এই বিধান প্রতিপালন না করতে গড়িমসি করছে।
উল্লেখ্য, তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে আরও ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। আইন অনুযায়ী সঠিক পন্থায় ও সঠিক সময়ের মধ্যে দেশে তামাকজাত পণ্যের মোড়কে ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রচলন না করা গেলে এদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবেনা। আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী বক্তারা যথাসময়ে তামাক পণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহŸান জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন