জার্মানির একজন চিকিৎসক পিটার এমিল বেকার এ রোগ আবিষ্কার করেন। এটি একটি এক্স লিংকড রিসেসিভ ডিজঅর্ডার। মেয়েদের এ রোগ হয়না বললেই চলে। ছেলেদের মধ্যেই রোগটি সচারচর দেখা যায়।
বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফিতে ডিসট্রফিন তৈরি কম হয়। ফলে মাংসপেশীর কোষের আবরণটিতে সমস্যা হয়। ডিসট্রফিন জিনে মিউটেশনের জন্যেই মূলত এমন হয়। ডুশিনি মাসকুলার ডিসট্রফি নামের একটি অসুখের সাথে এ রোগের মিল আছে। তবে ডুশিনি মাসকুলার ডিসট্রফিতে একেবারেই ডিসট্রফিন তৈরি হয়না। তাই সেটি বেশী মারাত্মক।
বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফিতে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমন-
১। মাংসপেশীতে দূর্বলতা। হাঁটতে, দৌড়াতে এবং লাফ দিতে সমস্যা হয়। যখন পূর্ণবয়স্ক হয় তখন হাঁটতেই পারেনা।
২। হাত , বুকও পেটের মাংসপেশীতেও সমস্যা হয়।
৩। শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হয়। ৪। ক্লান্তি
৫। হার্টের বিভিন্ন অসুখ দেখা যায়। ৬। রোগী বারবার পড়ে যায়।
৭। অস্থিতে বিভিন্ন সমস্যা হয়।
ভালভাবে ইতিহাস নিয়ে এবং পরীক্ষা করে বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফি ডায়াগনসিস করা যায়। তবে ডুশিনি মাসকুলার ডিসট্রফির সাথে এর মিল আছে। তাই কখনও কখনও সমস্যা হতে পারে। তবে বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফি একটু বেশী বয়সে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে রোগটি অগ্রসর হয়। মাংসপেশী ক্ষয়ে যেতে থাকে। হার্টেও সমস্যা দেখা দেয়। একেবারে নিশ্চিত হবার জন্য ল্যাবটেস্ট করা হয়। ক্রিয়েটিন কাইনেজ এনজাইম রক্তে বেড়ে যায়। ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি করা হয়। মাসল বায়োপসি এবং জেনেটিক টেস্ট করে ডায়াগনসিস নিশ্চিত করা হয়।
বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফির সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। উপসর্গ কমানো হয় এবং ফিজিক্যাল থেরাপীতে কিছুটা উপকার হয়। স্টেরয়েড কিছুটা উপকার করে। দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা ‘আইভি-আইজি’ ভাল কাজ করে। কিন্তু দাম বেশী বলে তেমন ব্যবহার হয়না। বর্তমানে এসএমটি সি ১১০০ এবং ডিবায়ো ০২৫ ওষুধ বের হয়েছে। তবে আমাদের দেশে এখনো এগুলো সহজলভ্য নয়।
বেকার’স মাসকুলার ডিসট্রফির রোগীরা ৪০ বছরের পর থেকেই মৃত্যুবরণ শুরু করে। কিছু রোগী স্বাভাবিক আয়ু পায়। রোগটি বাংলাদেশে খুব বেশী পরিবারে নাই। তাই ততোটা ভয়ের কিছু নেই ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন