আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে বিএনপির আগাম নির্বাচনের দাবি অযৌক্তিক, উদ্ভট ও হাস্যকর। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও তার দল কোন ক্ষমতা বলে, কোন আইনের বলে; একটা নির্বাচিত বৈধ সরকারের পদত্যাগ চান; এটা আমি জানতে চাই। এ ধরনের দাবি হাস্যকর, উদ্ভট ও ব্যর্থ দলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুইনা।
গতকাল বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মেঘনা টোল প্লাজায় দেশের প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায়ে নতুন বুথ স্থাপনের টাচ অ্যান্ড গো পদ্ধতির দুইটি লেনের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এই সকল দাবি অযৌক্তিক, উদ্ভট ও হাস্যকর। বরং আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য দল থেকে তাঁর নিজেরই (ফখরুল ইসলামের) পদত্যাগ করা উচিত।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতায় এসেছি। বিএনপির কথায় আসিনি। জনগণ চাইলে আমরা থাকব, জনগণ না চাইলে আমরা থাকব না। সংবিধানের বাইরে কিছুই হবে না। আরেকটা গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোন আইনের ভিত্তিতে তারা আমাদের পদত্যাগ চায়। আগাম নির্বাচনের দাবি আগাম রসিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি বলেন, আমরা জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতায় এসেছি, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছায় থাকবো; জনগণ না চাইলে চলে যাবো। কিন্তু সংবিধানের বাইরে কিছুই হবেনা। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এসেছি, আরেকটা নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যদি জনগণ আমাদের না চায়, আমরা থাকবো না। বিএনপির ইচ্ছায় আমরা ক্ষমতায় আসিনি। বিএনপির ইচ্ছায় পদত্যাগও করবো না। বরং ব্যর্থ নেতৃত্বের দায়ে বিএনপির নেতাদেরই পদত্যাগ করা উচিত।
কাদের বলেন, নেগেটিভ পলিটিক্স করতে করতে বিএনপি নিজেদের ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলেছে। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা আজকে হতাশ। তাদের নেতাকর্মীরা এই ব্যর্থ নেতৃত্বের পদত্যাগ চায়। ফখরুল সাহেবই পদত্যাগ করুক। তারই পদত্যাগ করা উচিত। কারণ তিনি এ যাবতকালে দলের দায়িত্ব নেয়ার পর ১০ মিনিটের জন্য একটি আন্দোলন দেখাতে পারেননি। কাজেই ব্যর্থ নেতৃত্বেরই আগে পদত্যাগ করা উচিত। ব্যর্থরাই সব সময় এ ধরনের প্রলাপ বকে।
তিনি বলেন, আগাম নির্বাচন আগাম রসিকতা ছাড়া কিছুই নয়। দেশে আগাম নির্বাচনের কোন অবকাশ নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা নির্বাচিত সরকার, আপনারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসেননি বলে, নির্বাচন কি অবৈধ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন যদি অবৈধ হতো; ঢাকায় ১৩৯ দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের নিয়ে কিভাবে আইপিইইউ সস্মেলন ঢাকায় হলো? আইপিইইউ সস্মেলন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সু-খবর। দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশের যদি আমাদের পার্লামেন্ট ও নির্বাচন নিয়ে কোনও সংশয় থাকতো, তবে আইপিইইউ সস্মেলন কি করে আমাদের দেশে হলো। সেই প্রশ্ন মির্জা ফখরুল ইামলাম আলমগীরের কাছে রাখতে চাই? কি করে বাংলাদেশের স্পিকার আইপিইইউ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলো? কি করে কমনওয়েলথ পার্লামেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার হতে পারেন এই প্রশ্নও রাখতে চাই ফখরুল সাহেবের কাছে।
এ সময় কাদের আরও বলেন, এবার ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। ফিরতি ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হয়েছে। অন্যান্য বছেরের তুলনায় এবার সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুহার অনেক কম হয়েছে। পত্রপত্রিকা ও পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ থেকে ৩০ জনের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে, ২০২০ সালের মধ্যে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনার। সেই টার্গেটকে সামনে রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসময় সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সড়ক বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনাম আহেমদ, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসেরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন