শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সরকার দলীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে স্বতন্র প্রার্থীর অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বিরুদ্ধে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারদের ভয় ভীতি দেখানো, হামলা, পোষ্টার ছোড়া, পুলিশ প্রশাসন দিয়ে হয়রানী এবং নৌকা প্রতিকে প্রকাশ্যে সিল মারার ঘোষণাসহ নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত এ সব অভিযোগ করেন কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মাসুদর রহমান মন্টু। তিনি অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের নির্দেশে নৌকা প্রতীকের লোকজন আমার কর্মীদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। তারা গণসংযোগে বাধা দিচ্ছেন, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং মোবাইলে হুমকি দিচ্ছেন। সংসদ সদস্য আনার নিজেই আচরণ বিধি ভঙ্গ করে নৌকা প্রতিকে ভোট চাচ্ছেন। এ জন্য তিনি নির্বাচনী সভা সমাবেশ করছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মকছেদ আলী একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ। তিনি নিজেই চলাফেরা করতে পারেন না। তরুণ ভোটারদের কাছে তাই আমার ও আমার প্রতীক নারিকেল গাছের জনপ্রিয়তা বেশি। এটা বুঝতে পেরে আমার ও আমার ভোটারদের বিরুদ্ধে এমপি আনার মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ প্রশাসন লেলিয়ে চরম ভাবে হয়রানীর চেষ্টা হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের দুইটি কেন্দ্র নলডাঙ্গা ভুষন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কালীগঞ্জ শিশু একাডেমী কেন্দ্র মোট ৫,৬১৬ জন ভোটার রয়েছে। এই ওয়ার্ডে মধুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনা। এই দুইটি কেন্দ্রের ৮৫% ভোট নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে টেবিলের উপর ছিল মেরে অথবা কেটে নেয়ার বাসনা নিয়ে এমপি আগেভাগেই একাধিক পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থীকে চাপ সৃষ্টি করে বসিয়ে দিয়েছেন। সেখানে তিনি ভাগ্নে মোঃ আশরাফুরজ্জামান আশরাফকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচন করিয়েছেন। এছাড়াও বর্তমানে সংরক্ষিত (৪,৫,৬) নং ওয়ার্ডের দুজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে এই কেন্দ্রে আমার নারিকেল গাছ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে নির্বাচনী বুথে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আমি সহ অন্যান্য মেয়র প্রার্থীরা আশংকা প্রকাশ করছি ৫নং ওয়ার্ডের ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে নৌকা প্রতীকে সাড়ে চার হাজার ভোট প্রকাশ্যে ছিল মেরে অথবা কেটে নেওয়া হতে পারে। তিনি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে উল্লেখিত দুইটি কেন্দ্রসহ পৌর এলাকার ১৯টি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি জানান। সেই সাথে র‌্যাব ও বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের দাবি করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদুর রহমান মন্টু অভিযোগ করেন, কালীগঞ্জের পুলিশসহ প্রত্যেকটি অফিসার স্থানীয় এমপির ভয়ে তটস্থ। তাই বাইরের উপজেলা থেকে আদর্শবান প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের দাবী করেন। মন্টু অভিযোগ করেন আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে যেকোনো মুহুতে আমাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তারা স্থানীয় সাংসদের চাপে নির্বিকার। অভিযোগ দিলেও কোন ফলপ্রসূ সমাধান আমি পাচ্ছি না। সন্ধ্যা হলেই নৌকা মার্কার কর্মীরা মোটর সাইকেলের মোহড়া দেয় এতে পৌরবাসী আতংকিত হয়ে পড়েন। এমপি ও তার সমর্থকদের এহেন কর্মকাণ্ডে আমার কর্মীরা আতঙ্কিত। তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন পৌরসভা নির্বাচন ২০১৬ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ, পৌরসভা নির্বাচন আচরণ বিধিমালা প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ্য আছে সংসদ সদস্যরা পৌরসভা নির্বাচনে নিজ দলীয় প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে সাধারণ ভোটারদের কোন প্রকার প্রভাবিত করতে পারবে না। এ সংক্রান্ত আইন এস.আর.ও নং- ৩৪৬-আইন/২০১৫-স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৮ নং আইন) এর ধারা ১২০ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) ধারা ২১ এর সহিত পঠিতব্য। এই আইনে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে নির্বাচন কমিশন বিধিমালা প্রণয়ন করেছেন। এমনকি অর্থ দণ্ডের বিধানও উল্লেখ করেছেন। এমতাবস্থায় কালীগঞ্জ পৌরসভার সাধারণ ভোটারদের মাঝে চাপা ক্ষোভ দানা বেধে উঠেছে। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হস্তক্ষেপে কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি আগামী ২০ মার্চের নির্বাচনে ভোটাররা যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সে ব্যাপারে অন্যায়, অবিচার, জুলুমবাজ ও জবর-দখলকারীদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন