রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পেনশসনসহ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ প্রদানের দাবিতে গতকাল বেলা ১১টায় বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে নোয়াখালী পৌরসভা প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের ৬৩টি পৌরসভা হতে প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সমাবেশে অংশ নেন। সমাবেশে উপস্থিত বক্তাগণ অনতিবিলম্বে পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেনশনসহ বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে প্রদানের জোর দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস এসোসিয়েশনের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম ভ‚ঁইয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণসহ বিভাগের অধিকাংশ মেয়র ও কাউন্সিলরগণ। সমাবেশের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খাঁন। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল আলীম মোল্যা। বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক। সঞ্চালনা করেন নোয়াখালী জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিঃ সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সহ-সভাপতি আজিজুল ইসলাম বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মুখপাত্র মোজাহিদুল ইসলাম তুষার, খোরশেদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বাবুল হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ, কামাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোঃ তোফায়েল আহাম্মদ, প্রচার সম্পাদক ইমরান আলী মোল্লা,সহ-প্রচার সম্পাদক জাকির হোসেন হেলাল, বিপুল সাহা,ময়মনসিংহ বিভাগের সভাপতি কামরুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি বেলাল আহমেদ খাঁন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহŸায়ক সুজিত বড়–য়া, নোয়াখালী জেলা সভাপতি জাকির হোসেন, নোয়াখালী পৌরসভার সচিব শ্যামল কুমার দত্ত, কেন্দ্রীয় সহ মহিলা সম্পাদিকা রোকসানা পারভীন, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু, ময়মনসিংহ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলীসহ বিভাগীয়, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু, জেলা ও ইউনিট নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিগণ, মেয়র ও কাউন্সিলরগণ তাদের বক্তব্যে পৌরসভা কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের দাবিকে ন্যায্য ও যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তা মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সম্মিলিত ভাবে প্রচেষ্টা চালাবেন বলে ঘোষণা দেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল আলীম মোল্লা তার বক্তব্যে বলেন, দেশের ৩২৬টি পৌরসভার ন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৬৩টি পৌরসভায় বেতন, পিএফ, গ্রাচুইটি, সম্মানী এবং অন্যান্য বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা । ১১২ জন কর্মচারী অবসরে গেছেন। তাদের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। পেনশনের টাকা পেয়ে না পেয়ে অনেকে অর্ধাহারে-অনাহারে আছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও তারা পাওনা পাচ্ছেন না। বাংলাদেশের প্রায় ২২৬টি পৌরসভার বেতন-ভাতা ২ থেকে ৫২ মাস পর্যন্ত বাকি থাকায় পৌরসভাসমূহ একটি অচল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এবারও ৬৫% পৌরসভায় ঈদের বেতন-বোনাস না পাওয়ায় অবর্ণনীয় কষ্টে ঈদ কেটেছে তাদের। সারাদেশে বকেয়া টাকার পরিমাণ ৫১৬ কোটি টাকা। অবসরে যাওয়া ৭৬৯ জনের বকেয়া পাওনা ১২৫ কোটি টাকা। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে শতভাগ পৌরসভা অচল হবার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদের আগে গার্মেণ্টস্ শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না হলে সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধের জন্য জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও আমাদের বেলায় কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বর্তমানে চরম আর্থিক দৈন্যতায় থাকা দেশের ৩২৬টি পৌরসভাকে আরো গতিশীল ও উন্নয়নশীল করার লক্ষ্যে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে সরকারের রাজস্ব কোষাগার হতে পেনশসহ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। অন্যথায় ন্যায্য দাবি আদায়ে এবং জীবন বাঁচাতে আগামী ৭ অক্টোবর ২০১৭ইং ঢাকায় মহাসাবেশের মাধ্যমে যেকোন কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। দাবী আদায় ছাড়া সেখান থেকে আমাদের পিছু হটার কোনো পথ থাকবে না। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন