ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বিরুদ্ধে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানো, হামলা, পোস্টার ছোড়া, পুলিশ প্রশাসন দিয়ে হয়রানি এবং নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারার ঘোষণাসহ নির্বাচন আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত এ সব অভিযোগ করেন কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মাসুদুর রহমান মন্টু। তিনি অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের নির্দেশে নৌকা প্রতীকের লোকজন আমার কর্মীদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। তারা গণসংযোগে বাধা দিচ্ছেন, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং মোবাইলে হুমকি দিচ্ছেন। সংসদ সদস্য আনার নিজেই আচরণবিধি ভঙ্গ করে নৌকা প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন। এ জন্য তিনি নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মকছেদ আলী একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ। তিনি নিজেই চলাফেরা করতে পারেন না। তরুণ ভোটারদের কাছে তাই আমার ও আমার প্রতীক নারিকেল গাছের জনপ্রিয়তা বেশি। এটা বুঝতে পেরে আমার ও আমার ভোটারদের বিরুদ্ধে এমপি আনার মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ প্রশাসন লেলিয়ে চরমভাবে হয়রানির চেষ্টা হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের দুইটি কেন্দ্র নলডাঙ্গা ভুষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কালীগঞ্জ শিশু একাডেমী কেন্দ্র মোট ৫,৬১৬ জন ভোটার রয়েছে। এই ওয়ার্ডে মধুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনা। এই দুইটি কেন্দ্রের ৮৫% ভোট নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে টেবিলের উপর ছিল মেরে অথবা কেটে নেয়ার বাসনা নিয়ে এমপি আগেভাগেই একাধিক পুরুষ কাউন্সির প্রার্থীকে চাপ সৃষ্টি করে বসিয়ে দিয়েছেন। সেখানে তিনি ভাগ্নে মোঃ আশরাফুরজ্জামান আশরাফকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় কাউন্সিলর নির্বাচন করিয়েছেন। এছাড়াও বর্তমানে সংরক্ষিত (৪, ৫, ৬) নং ওয়ার্ডের দুজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে এই কেন্দ্রে আমার নারিকেল গাছ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের নির্বাচনী বুথে ঢুকতে দেয়া হবে না। আমিসহ অন্যান্য মেয়র প্রার্থীরা আশংকা প্রকাশ করছি ৫নং ওয়ার্ডের ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে নৌকা প্রতীকে সাড়ে চার হাজার ভোট প্রকাশ্যে সিল মেরে অথবা কেটে নেয়া হতে পারে। তিনি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে উল্লেখিত দুইটি কেন্দ্রসহ পৌর এলাকার ১৯টি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি জানান। সেই সাথে র্যাব ও বিজিবির স্টাইকিং ফোর্স মোতায়েনের দাবি করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদুর রহমান মন্টু অভিযোগ করেন, কালীগঞ্জের পুলিশসহ প্রত্যেকটি অফিসার স্থানীয় এমপির ভয়ে তটস্থ। তাই বাইরের উপজেলা থেকে আদর্শবান প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের দাবি করেন। মন্টু অভিযোগ করেন আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে যেকোন মুহূর্তে আমাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তারা স্থানীয় সাংসদের চাপে নির্বিকার। অভিযোগ দিলেও কোন ফলপ্রসূ সমাধান আমি পাচ্ছি না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন