বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মায়ানমারকে চাপ দিতে ভারতের প্রতি ওবায়দুল কাদেরের আহ্বান

সেনাবাহিনী ত্রাণ কার্যক্রমে আজ থেকে অংশ নেবে

বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন বন্ধ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মায়ানমারের উপর চাপ দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক-সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিবেশী দেশ ভারত যেমন আমাদের পাশে ছিল, তেমনি এখনও আমাদের পাশে আছে। বাংলাদেশের যেকোনো দুঃসময়ে ভারত আমাদের সঙ্গেই থাকে। মায়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে ভারত সরকার বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশা করেন তিনি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় ও পূনর্বাসনে অংশ নিচ্ছেন সেনা সদস্যরা। এতে করে দূর হবে রোহিঙ্গা শিবির গুলোতে বিরাজিত নানা সমস্যা ও দুর্দশা। হবে সমন্বিত ও সুষম ত্রান বন্ঠন এবং পুনর্বাসন। এসব রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরুষের সংখ্যা দশ লাখেরও বেশী। এরা গত একমাস ধরে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেদেশের সেনা-পুলিশ ও মগদস্যুদের নিষ্ঠুর নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ সমন্বয় ও পুনর্বাসন কাজে সেনাবাহিনী নিয়েগের সরকারী সিদ্ধান্তটি প্রসংশিত হয়েছে সবর্ত্র।
আজ শুক্রবার থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ কার্যক্রম ও পুনর্বাসন কাজে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, শুক্রবার থেকেই রোহিঙ্গাদের ত্রাণ কার্যক্রম ও পুনর্বাসন কাজে সেনাবাহিনী অংশ গ্রহণ করবে। গতকাল উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভারত সরকারের দেয়া ত্রাণ সামগ্রী বিতরণকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একথা বলেন। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরষের মাঝে এখন ত্রাণ কার্যক্রম চলছে সমন্বয়হিনভাবে। আশ্রয় নেয়া ১০ রাখের মত রোহিঙ্গাদের জন্য দেশী-বিদেশী প্রচুর ত্রাণ সামগ্রী আসতে শুরু করলেও এগুলোর সুষম বন্ঠনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ বিতরণ হয়ে আসছিল। এতে করে কেউ পাচ্ছে আবার কেউ পাচ্ছে না, এরকম ভাবেই ত্রাণ বিতরণ হচ্ছিল।
উখিয়ার ৭টি এবং টেকনাফের ৫টি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে সরেজমিনে দেখা গেছে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে সুষম ত্রাণ বিতরণ সাধারণ কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন মহল থেকে বিশেষ করে দেশের সুশীল সমাজ ও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করার দাবী জানানো হচ্ছিল। সরকার বিষয়টির যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পূনর্বাসন কাজে সেনাবাহিনীকে সম্প্রক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে জানাগেছে।
রোহিঙ্গাদের মাঝে দেশী-বিদেশী এবং বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিদের উদ্যোগে ত্রাণ তৎপরতা চলতে থাকলেও তা ছিল এতদিন বিক্ষিপ্ত এবং সমন্বয়হীন। সরকার এই ত্রাণ তৎপরতায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও সমন্বয় সৃষ্টি করতে এবং পুনর্বাসনে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ সমন্বয় ও পূনর্বাসনে সেনাবাহিনীর অংশ গ্রহণের বিষয়টি সর্বত্র প্রসংশিত হয়েছে। সেনাবাহিনী দেশে-বিদেশে দুর্যোগ মোকাবেলায় ভূমিকা পালন করে প্রসংশা কুড়িয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ত্রাণ সমন্বয় ও পূনর্বাসন কাজে সেনাবাহিনীর সুষ্ঠু ও দক্ষ পরিচালনায় সুষম ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে আশা করছেন দেশবাসী।
আইএসপিআরের একটি সূত্রে জানাগেছে, সরকারা সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো রেকি করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আজ শুক্রবার থেকেই সেনা সদস্যরা কার্যক্রম শুরু করবে।
এ সময় সেতু মন্ত্রীর সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামিম, মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন