বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পোল্ট্রি ফার্ম রোকেয়া আক্তারের সাফল্যগাঁথা

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ঈশ্বরদী থেকে এসএম রাজা : ঈশ্বরদী শহরের অরনকোলা এলাকার নারী উদ্যোক্তা মোছা. রোকেয়া আক্তার উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ২০০৩ সালে মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে ১ হাজার মুরগির বাচ্চা দিয়ে পোল্ট্রি খামার শুরু করেন। পোল্ট্রি খামার করে মাত্র ১৪ বছরে আজ তিনি একজন সফল পোল্ট্রি খামারি। পোল্ট্রি খামারকে প্রসারিত করতে সব সময় কাজের মাঝে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পোল্ট্রি খামারের পাশাপাশি, মৎস্য চাষ, ধান চাষ ও সবজি উৎপাদন খামার গড়ে তুলেছেন। এর পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এখন শুধু এগিয়ে চলেছেন সামনের দিকে। রোকেয়া ইতোমধ্যে জাপানী একটি সংস্থায় কৃষির ওপর ১৮ মাসের প্রশিক্ষন নিয়েছেন। উদ্যোক্তা রোকেয়া জানান, বিয়ের আগে ১ লক্ষ ৬০ হাজার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বানিজ্যিক লেয়ার ফার্মে ম্যানেজমেন্টে কর্মরত ছিলাম। বিয়ের পর স্বামীর সহযোগিতায় ২০০৩ সালে লেয়ার জাতের ১ হাজার মুরগি পালন শুরু করেন। মুরগি পালন করে তিনি গোটা বছরের পারিবারিক ডিমের ও মুরগির চাহিদা মিটানোর পর ডিম ও মুরগি বিক্রি করে বাড়তি কিছু আয়ও করতে থাকেন। এরপর তিনি তার খামারকে প্রসারিত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তার খামারে ৬ হাজার মুরগি রয়েছে এর মধ্যে ৪ হাজার মুরগি ডিম দেয় বাকি গুলো ছোট বাচ্চা। প্রতিদিন তিনি খামার থেকে ৩ হাজার ৮’শ ডিম বিক্রি করে থাকেন। রোকেয়া বলেন, বর্তমানে পোল্ট্রি ও সবজি খামারে ১৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এর মধ্যে ৪ জন নারী ও ২ জন প্রতিবন্ধি শ্রমিক রয়েছে।
রোকেয়া পোল্ট্রি খামারের স্বত্ত¡াধিকারি নারী উদ্যোক্তা মোছাঃ রোকেয়া আক্তার আরও বলেন, মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট করেছি তা থেকে পরিবারের রান্নার কাজ চলছে। এতে কিছুটা হলেও রান্নার কাজে দেশের গাছ, কাঠ বেঁচে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমার আর্থিক অবস্থা পোল্ট্রি খামার দেখে এলাকার অনেক বেকার ছেলে পোল্ট্রি খামার করে তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হয়েছেন। তিনি বলেন দেশের অবহেলিত নারী সমাজকে এগিয়ে নিতে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, গবাদি পশু পালন, নকশী কাঁথা, টেইলারিং, হস্তশিল্প ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন সেন্টার গড়ে তুলতে চাই। রোকেয়া বলেন, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে পোল্ট্রি খামার করে স্বাবলম্বি হওয়া সম্ভব। এতে বেকারত্ব ঘুচবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের পোল্ট্রি খামার করার জন্য আহŸান জানান।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা জামান বলেন, রোকেয়া আক্তার পোল্ট্রি খামার করে আজ তিনি সফল ও মডেল খামারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। রোকেয়া পোল্ট্রি খামার করে কিছুটা হলেও দেশের মুরগি ও ডিমের চাহিদা পূরণ করছেন। সেই সাথে দেশের মানুষের পুষ্টির যোগানও দিচ্ছেন। রোকেয়ার দেখা দেখি ওই এলাকায় বেকারদের মধ্যে পোল্ট্রি খামারের প্রতিযোগিতা চলে এসেছে। রোকেয়া পোল্ট্রি খামারটি পরিষ্কার-পরিচ্ছনভাবে সাজানো গোছানো। রোকেয়া এভাবে তার পোল্ট্রি খামারের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারলে আগামিতে স্বর্ণ শিখরে পৌছানো সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমরা তাকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে চলেছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন