শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিএনপিকে বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে না আওয়ামী লীগ -ওবায়দুল কাদের

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার :আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে মাঠের বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে না আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাই না। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। সবদলের অংশগ্রহণেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের কাম্য। কিন্তু তারা নির্বাচনে না আসলে কী আমরা জোর করে আনতে পারবো? বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচনের যেতে চায় সরকার মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলতে চাই, বিএনপি একটি বড় দল। তাদের বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে আমরা চাই না। দুর্বল মাঠে গোল দিব এই চিন্তা আওয়ামী লীগের নেই। আমরা উন্নয়ন অর্জনের এমন অবস্থায় পৌছেছি, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এতই তুঙ্গে, এমন কি সারা দুনিয়ায়। একটা পদ্মা সেতু করে শেখ হাসিনা যা করেছে বিএনপি সারা শাসনামলে দেখানোর মত একটা উন্নয়ন কোথাও নেই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মীরপুরে শাক্যমনি বৌদ্ধ বিহারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ২৯তম দানোত্তর কঠিন চিবর দান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘ বাংলাদেশ ও শাক্যমনি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তাহলে কেন, কেন আমরা বিএনপিকে ভয় পাবো? আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। বিএনপিকে ছাড়া আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাই না বা দুর্বল প্রতিপক্ষ চাই না। আমরা শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে আবারও বিজয় অর্জন করতে চাই।
আগামী নির্বাচনের সঙ্গে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ চায়। বিএনপি সেই শক্তিশালী পক্ষ হয়ে আসুক। তিনি আরও বলেন, এবার নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়তে পারে। ফলে তাদের উচিত নির্বাচনে এসে অন্তত নিজেদের অস্তিত্বটুকু রক্ষা করা।
ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর বিএনপি আদালতের প্রশংসা করলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানায় অনিহা কেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি এমন প্রশ্ন রেখেছেন ওবায়দুল কাদের
সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আসতে দিতে চায়না বলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, আমি প্রথমে প্রশ্ন করবো মির্জা ফখরুল সাহেবকে, এই গ্রেফতারি পরোয়ানা কে জারি করেছে? সরকার, না আদালত?
তিনি বলেন, এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি তো সরকার করেনি। এটা আইনের ব্যাপার এটা মামলা সংক্রান্ত বিষয়। আদালত আজকে যখন ষোড়শসংশোধনী রায় প্রদান করে তখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন।
কাদের বলেন, আর যখন বংলাদেশের আদালত বিএনপি চেয়ারপারসনকে কোন মামলার কারণে বারবার পরোয়ানা দিলেও হাজির হয় না। ১৫০ বার হাজিরা মিস করেছেন, এই ভাবে সময়ের পর সময় তারিখের পর তারিখ তিনি বদলান। এখন তো তিনি বিদেশে, দলের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন দুই মাসের, চার মাস হয়েছে। ফখরুল সাহেবও জানেন না কবে তিনি দেশে আসবেন। তাহলে আদালতের হাজিরা আর কতকাল তার জন্য বন্ধ রাখতে হবে। আর সে বন্ধ রাখা কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? নিজেদের বেলা হলে সরকারের দোষ, আর সরকারের বিরোদ্ধে হলে বিচার বিভাগ স্বাধীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি শুধু প্রশ্ন রাখবো এই আদেশটা কার? এই আদেশ কি থানা থেকে পুলিশ করেছে? সে পরোয়ানার নির্দেশ কোথা থেকে? আদালতের। তাহলে আদালতকেই জিঙ্গেস করুন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক চাপে মায়ানমার সুর নরম করলেও এটা তাদের আসল রূপ নয়। তিনি জাতিসংঘের উদ্দেশে বলেন, আপনারা মায়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করুন। এখানে যারা এসেছে, এদেরকে আপাতত অন্যান্য দেশে স্থানান্তরিত করুন। এই বোঝা আমরা আর বইতে পারছি না। আমাদের পক্ষে অসাধ্য হয়ে গেছে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, এখনও ¯্রােত আসছে, অপ্রতিরোধ্য ¯্রােত রোহিঙ্গাদের। আমরা কোথায় রাখব। আমাদের এখানে সামাজিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক বিপর্যয়, অস্ত্র আসছে। কে না জানে এখানে রোহিঙ্গা ¯্রােতের সঙ্গে ইয়াবা ¯্রােত আসছে। কাজেই এটা আমাদের সামাজিক জীবনে সাংঘাতিক একটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। আমাদের জনজীবনের প্রভাব অত্যন্ত ডেঞ্জারাস।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করেনি। মায়ানমারে বসনিয়া ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যদি কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হত তাহলে মায়ানমারের সুর নরম হল কীভাবে? মায়ানমার রোহিঙ্গাদের বিতাড়ণ, নির্যাতন করে এটা চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে, তাদের অবস্থান অনড় সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। এখন তো মায়ানমারের মন্ত্রী আসার পর একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের সুর যদি নরম না হতো অবস্থানের যদি পরিবর্তন না হতো তাহলে মায়ানমারের মন্ত্রী কীভাবে বাংলাদেশে আসে আলোচনা করে? জয়েন্ট ওয়ার্কিং করে? আমাদের সব কিছুর জন্য ধৈর্য্য ধরতে হবে। ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। আমরা যদি তাদের ফাঁদে পা দেই তাহলে গোটা অঞ্চলের ক্ষতি হবে।
মিয়ানমার বারবার সীমানা লঙ্ঘনের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কয়েকবার সীমানা লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু সবার চাপে এটা এখন আর করছে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা ¯্রােত সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতিতে আঘাত হানবে না। সা¤প্রদায়িক যেকোনো সংঘাত মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে। ২৫ আগস্টের পর ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের কান্না যখন বাংলাদেশের নদী-সাগরে মিলছে, তখন অনেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু শঙ্কা দূর হয়েছে সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণেই।
বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের উদ্দেশে সড়ক পরিবহণমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আপনারা মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকুন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন।
পার্বত্য বৌদ্ধসংঘের সভাপতি ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তাফা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মি কে এস মং, আওয়ামী লীগের উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
সবুর খান ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:৩৮ এএম says : 0
আপনারা কী করতে চান সেটা আমরা ভালো করেই জানি
Total Reply(0)
Palash Sharker ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১:১১ পিএম says : 1
বি এন পি কে বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগ আর নির্বাচনে যেতে পারবেনা ঐটা বলো
Total Reply(0)
Saiful Alam ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১:১২ পিএম says : 0
তাহলে এক কুচু মুচু করেনকেন? সুষ্ট নির্বাচনের ডাকদিন তত্তাবিদায়ক সরকারের অদিনে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন