নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসা বিএনপি এখন থেকে তারা আর এই দাবি করবে না, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতেই ফিরে যাবে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, তারা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুলে আসছেন। কিন্তু এটা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাই তারা আর সহায়ক সরকারের কথা বলবেন না। এখন থেকে আমরা সহায়ক সরকারের বদলে নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাব।
বিএনপি তার পুরনো দাবিতে ফিরে যাচ্ছে জানিয়ে বিগত বিএনপি সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, যদি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ হবে। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। শুধু তাই নয়, ইসির মাঠ পর্যায়ে লোক নেই। তারা প্রশাসনকে কাজে লাগাবে। আর প্রশাসন মানেই প্রধানমন্ত্রীর আওতা।
তিনি বলেন, তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় বিএনপি। কারণ সহায়কের প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি থাকলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে না। একই সঙ্গে ভোটের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী নামতে হবে।
মওদুদ বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ। আজকে ভারত, চীন ও রাশিয়া সমর্থন দিচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশে তাদেরকে এত বেশি বিনিয়োগের সুবিধা দিয়েছেন। তাহলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন আদায় করতে পারছেন না কেন? তিনি বলেন, আগে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করতে হবে। এখানে আমাদের কূটনীতিক ব্যর্থতা আছে। সরকার এই জটিলতা আরও জটিলতর করছে। জাতিসংঘ একটা কিছু করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। এভাবে সংখ্যা বৃদ্ধি আর সময় যেতে থাকলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নেমে যাবে রোহিঙ্গারা। তাতে উগ্রপন্থিরা দেশে ঢুকবে। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে ২৮শে অক্টোবর। ২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সেদিন অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল। শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয় সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে সেই লগি বৈঠার তান্ডব। লগি বৈঠা দিয়ে তারা ৬ জন জীবন্ত মানুষকে হত্যা করেছিল। শুধু তাই নয় তারা মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছিল। তাদের আত্মার দায়িত্ব বোধ থেকে বলতে বাধ্য হচ্ছি এর বিচার বাংলাদেশের মাটিতে একদিন হবেই।
এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান রহমান মোস্তফা, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন