স্পোর্টস রিপোর্টার : মিচেল ম্যাকক্লেনাগানের বোলিং তাÐবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো নিউজিল্যান্ড। ভারতের পর এবার তাদের শিকার অস্ট্রেলিয়া। ম্যাকক্লেনাগান ১৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেট শিকার করে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন। তার অসাধারণ বোলিংয়েই ১৯তম ওভারে প্রায় শেষ হয়ে যায় অজি আশা-ভরসা। শেষ পর্যন্ত ৮ রানে হেরেই মাঠ ছাড়ে স্টিভেন স্মিথের দল।
গতকাল ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে তুলে ১৪২ রান। জবাবে ৯ উইকেটে ১৩৪ রান তুলতেই ওভার শেষ করে অস্ট্রেলিয়া।
জয়ের জন্য ১৪৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওয়াটসনের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটিতে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খাওয়াজা। তার ঝড়ো গতির ব্যাটিংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেননি কিউই বোলার কোরি অ্যান্ডারসন, অ্যাডাম মিলনরা। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ওয়াটসনকে ফিরিয়ে অজি শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ম্যাকক্লেনাগান। তার বোলে বিভ্রান্ত হয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার ওয়াটসন। পরে মিচেল স্যান্টনার নিজের প্রথম দুই ওভারে কাঁপিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং লাইনআপকে। বাঁহাতি এই স্পিনারের প্রথম দু’ওভারে ফিরে যান স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ঝুলিয়ে দেয়া বল এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে লুক রনকির স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন স্মিথ। চার নাম্বারে খেলতে নামা ওয়ার্নার পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে মার্টিন গাপটিলের হাতে ধরা পড়েন। এ দু’জন আউট হওয়ার মাঝে রান আউট হয়ে ফিরে যান খাওয়াজা। তিনি ২৭ বলে ৩৮ রান করেন ছয়টি চারের মারে। প্রথম ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান সংগ্রহ করলেও অস্ট্রেলিয়া পরের পাঁচ ওভারে ২৪ রান তুলতেই হারায় ৩ উইকেট। ১১তম ওভারের শুরুতে ফিরে যান ওয়ার্নারও। ৬৬ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে অজিরা। তবে ১৫ ওভারে দলকে একশ’ রান করে তারা। শেষ ৫ ওভারে জয়ের জন্য ৪৩ রান প্রয়োজন ছিল অস্ট্রেলিয়ার। হাতে ৬ উইকেট থাকায় তাদের লক্ষ্যটাও তত কঠিন ছিল না। কিন্তু ইশ সোধির বলে ডিপ এক্সট্রা কাভারে কেন উইলিয়ামসনের হাতে ম্যাক্সওয়েল ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলে ম্যাচে ফিরে নিউজিল্যান্ড। এরপরও অস্ট্রেলিয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখেন মার্শ। তার দৃঢ়তায় ১৮ ওভার শেষে দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১২১ রান। শেষ দুই ওভারে অজিদের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। তবে সমীকরণ পাল্টে দিতে ১৯তম ওভারটিকে লক্ষ্য করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ওই ওভারেই ম্যাচ নিজেদের করে নেন ম্যাকক্লেনাগান। তার দুই বলে বিভ্রান্ত হয়ে মার্শ ও অ্যাশটন অ্যাগার ফিরে গেলে অস্ট্রেলিয়ার আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়।
তবে ব্যাটিংয়ে জেমস ফকনার ছিলেন বলে শেষ ওভারে ১৯ রানও সম্ভব ছিল। কিন্তু প্রথম বলেই তাকে ফিরিয়ে জয়কে আরো কাছে নিয়ে আসেন কোরি অ্যান্ডারসন। তিন উইকেট শিকার করে নিউজিল্যান্ডের বোলিং সেরা ম্যাকক্লেনাগান। দু’টি করে উইকেট পান অ্যান্ডারসন ও স্যান্টনার।
এর আগে কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে চমৎকার সূচনা এনে দেন মার্টিন গাপটিল। নাথান কোল্টার-নাইলের করা প্রথম ওভারে দুই চার হাঁকিয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন তিনি। সবচেয়ে বেশি চড়াও হন অ্যাশটন অ্যাগারের ওপর। তৃতীয় ওভারটি করতে আসা এই বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম দুই বলেই হাঁকান দুই ছক্কা। শেষ বলে আবার হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান তিনি। গাপটিল ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রথম সাত ওভারে ৬১ রান তুলে নিউজিল্যান্ড। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে কিউই এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে স্বস্তি আনেন ফকনার। গাপটিলের বিদায়ের পর দ্রæত তাকে অনুসরণ করেন উইলিয়ামসন ও অ্যান্ডারসন। তবে কলিন মানরো (২৬ বলে ২৩ রান) ও গ্র্যান্ট এলিয়টের (২০ বলে ২৭ রান) দু’টি কার্যকর ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় তারা। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাক্সওয়েল ও ফকনার দু’টি করে উইকেট নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন