কদিন আগেও শীতের সবজি মুলা দামের দিক দিয়ে তেজ দেখালেও মাত্র এক সপ্তাহের ব্যাবধানে প্রায় মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ৪০ টাকা কেজি আর হাটে ৩০ টাকা হলেও গতকালের চিত্র ছিল উল্টো।
হাটে প্রকারভেদে দুই থেকে পাঁচ টাকা কেজিতে মুলা কেনার লোক ছিল না। এতে উৎপাদকরা হতাশ হয়ে পড়ে। কদিন আগেও যে মুলা হাটে ১২শ’ টাকা মূল্যে বিক্রি হয়েছে গতকাল তার দাম উঠে ৮০ থেকে দেড়শ’ টাকা। হাট-বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। সবজির দাম কম-বেশী কমেছে। কিন্তু মুলার বাজার একেবারে পড়ে গেছে। শুরুতে মুলার আশাতীত দাম পেয়ে মুলা চাষির মুখে যে হাসি ছিল গতকালের মূল্য তা ফিকে করে দিয়েছে। পাইকারি বাজারে মুলা বিক্রি করে শ্রমিক খরচও উঠছে না।
এ বছর সারাদেশের মত রাজশাহীতেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। সবজির নীচু ক্ষেতগুলো তলিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবেই দেখা দেয় সবজির সঙ্কট। চাষিরা জমি থেকে পানি নামার সাথে সাথে চাষের উপযুক্ত হলেই কম দিনের সবজি মুলার আবাদ করেছেন। গতকাল রাজশাহীর মোহনপুরের বিদিরপুর কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, হাটভর্তি মুলা। এছাড়াও আছে ফুলকপি ও বেগুন। এখনো ফুলকপির বাজার হাজার টাকা মণ থাকলেও মুলার মণ মাত্র ৮০ টাকা। তবে পরে পাইকাররা কিছু মুলা ২শ’ টাকা মণ দরে কিনেছেন।
পবার তেঘর গ্রামের এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমার বেশী জমি নেই। মাত্র পাঁচ শতাংশ জমি থেকে মুলা বিক্রি করেছি ১২ হাজার টাকার। এরপর আবারো ওই জমিতে মুলার বীজ বপন করেছিলাম। শনিবার জমিতে পাইকাররা প্রতিমণ একশ’ বলে। এতে মনটা খারাপ হয়। শ্রমিক খরচ করে জমি থেকে মুলা তুলে বাজারে এনেছি।। কিন্তু আজ এই বাজারে মুলা ৮০-১০০ টাকা মণ।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫শ’ হেক্টর জমিতে মুলার আবাদ হয়েছে। রাজশাহী কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দেব দুলাল ঢালী জানান, এখনো মুলা আবাদের সঠিক পরিসংখ্যান নিরুপন হয়নি। তবে দাম ভাল থাকায় অনেক আগে থেকে চাষিরা মুলার আবাদ করেছেন। গতবারের চেয়ে রাজশাহী জেলায় সবমিলিয়ে প্রায় দ্বিগুন মুলার আবাদ হবে। কিন্তু হঠাৎ করে মুলার বাজার ধ্বসের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুলার জমিতে যারা আলু চাষ করবেন তারা চাহিদার তুলনায় বেশী মুলা বাজারজাত করছেন সে কারণেও মুলার বাজার কমতে পারে। এছাড়াও কৃষি বিভাগ কৃষি ফসলের উৎপাদন নিশ্চিত করে। আর বাজার মনিটরিং করেন অন্য বিভাগ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন