এবার ইয়াবা পাচারে ব্যবহার হচ্ছে মাছবাহী কাভার্ড ভ্যান। টেকনাফ থেকে সরাসরি মাছের আড়ালে ইয়াবা চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। সংঘবদ্ধ ইয়াবা সিন্ডিকেট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে এ নতুন কৌশল নিয়েছে। মাছবোঝাই একটি কাভার্ড ভ্যান থেকে সোয়া লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের পর এ কৌশল জানতে পেরেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ইয়াবা পাচারকারীরাই পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা গতকাল (সোমবার) বাকলিয়া থানার নতুন ফিশারি ঘাট এলাকায় মাছবাহী একটি কভার্ড ভ্যান থেকে এক লাখ ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। ইয়াবাসহ আটক করা কভার্ড ভ্যানটি টেকনাফ থেকে মাছ নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ কভার্ড ভ্যান চালকসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন- কাভার্ড ভ্যান চালক মোঃ মামুন বেপারি (৩৩) এবং দুই সহোদর মোঃ শাহজাহান (৩২) ও মোঃ আনোয়ার (২০)।
এডিসি (বন্দর-পশ্চিম) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, কাভার্ড ভ্যানটিতে যে কৌশলে ইয়াবাগুলো রেখে পাচার করা হচ্ছিল, সেখান থেকে আমরা নিশ্চিত এর সাথে কাভার্ড ভ্যান মালিকও যুক্ত। বিভিন্ন কৌশলের মতো ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এবার পরিবহনকে বেছে নিয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তিনি বলেন, মাছ পচনশীল হওয়ায় সড়কে পুলিশ এসব কাভার্ড ভ্যান আটকায় না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা মাছের আড়ালে ইয়াবা পাচার করছে।
এডিসি এএএম হুমায়ন কবির জানান, কাভার্ড ভ্যানটিতে বিশেষভাবে তৈরি একটি চেম্বার ছিল। যেটার ভিতর করে ইয়াবাগুলো নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি বলেন, যেভাবে কাভার্ড ভ্যানটিতে বিশেষ কৌশলে ‘চেম্বার’ তৈরি করা হয়েছে, সেটা বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবে না আলাদা কোনো প্রলেপ। কাভার্ড ভ্যানের ভেতরের রংয়ের মতো করে রঙ লাগানো ছিল। যেটা স্ক্রু দিয়ে লাগানো। তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ একটি চক্র ইয়াবা পাচারের জন্য কাভার্ড ভ্যানগুলো মালামাল পরিবহনের আড়ালে ইয়াবা পাচারের জন্য রাস্তায় নামিয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, কাভার্ড ভ্যানটিতে ‘এসআরপি কার্গো সার্ভিস’ লেখা ছিল। আমাদের ধারণা কাভার্ড ভ্যানটি ইয়াবা পাচারের জন্য বিশেষ কৌশল রেখে মালিক তৈরি করেছে। গত ২৫ অক্টোবর গাড়িটি রাস্তায় নামানো হয়েছে এবং এর মধ্যে তারা টেকনাফ থেকে ঢাকায় পাঁচটি ইয়াবার চালান পাচার করেছে। চক্রটির কাছে আরও চার থেকে পাঁচটি গাড়ি রয়েছে। যেগুলো বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির নামে চলাচল করে। কাভার্ড ভ্যানে ২৫ টন মালামাল পরিবহনের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও তারা দ্রæতগতিতে চালানোর জন্য পাঁচ থেকে সাত টনের বেশি মালামাল পরিবহন করে না।
নাম প্রকাশ না করে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার আনোয়ারের মাধ্যমে চক্রটি টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে। আর আনোয়ার হোসেন বাবু নামে অপর এক ব্যক্তি গাড়িটির সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করে। বাবু ঢাকায় মালামাল পরিবহনের জন্য বিষয়টি দেখত এবং তার ভেতরে করে ইয়াবা পাচার করত। গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন তাদের সবকিছু দেখভাল করেন বাবু। আর মালিকের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। কাভার্ড ভ্যান মালিকের নাম পুলিশ খুঁজছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন