মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জোড়া উইকেটে শুরু মুস্তাফিজের সামি-স্যামিতে ম্লান তামিম ঝড়

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ক্রিকেট অনিশ্চয়তার গৌরবময় খেলা। তারমধ্যে টি২০ ক্রিকেট হলে তো কথাই নেই! তারপরও যে দলে থাকেন ড্যারেন স্যামির মতো ব্যাটসম্যান, সেই দল নিয়ে বাজি ধরাই যায়! অন্তত দলে ড্যারেন স্যামি থাকলে বাজিতে জয়ের পাল্লাটা থাকে ভারী। কারণ, যে কোনো পরিস্থিতি একাই পাল্টে দিতে পারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সাবেক এই অধিনায়ক। গতকাল চট্টগ্রাম ভেন্যুতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমে আরো একবার নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিলেন ড্যারেন স্যামি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে যখন রাজশাহী কিংসকে ১৫০ রানের মধ্যেই আটকে রাখতে যাচ্ছিল, ঠিক এই সময়ে শেষ ওভারে ৩২ রান তুলে নিয়ে বোলার সাইফুদ্দীনের ওপর দিয়ে টর্ণেডো বইয়ে দেন স্যামি। শেষ ওভারে ব্যাট হাতে মূর্তিমান আতংক হয়ে ড্যারেন স্যামি চারটি বিশাল ছক্কা ও একটি ভাউন্ডারি হাঁকান।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৪ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। আর একটি বল মোকাবিলা করার সুযোগ পেলেই হয়তো ফিফটি করেই মাঠ ছাড়তে পারতেন ড্যারেন স্যামি। অবশ্য ম্যাচ শেষে তার এই ফিফটি না করতে পারার অতৃপ্তি অবশিষ্ট থাকেনি। কারণ, শেষ ওভারে নেয়া তার ৩২ রানই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ম্যাচটি হেরে গেছে ৩০ রানে। সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দুর্দান্ত এক জয় তুলে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়ার পাশাপাশি রাজশাহী কিংস দলপতি ড্যারেন স্যামি পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংটাই বেছে নিয়েছিলেন রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ডোয়াইন স্মিথ (১৯) ও মুমিনুল হক (২৩) ওপেনিং জুটিতে ৪৩ রান যোগ করে অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন। এরপর অবশ্য দু’জনেই আউট হয়ে গেছেন দলীয় ৪৭ রানের মধ্যেই। দুই ওপেনার বিদায় নেয়ার পর ওয়ান ডাউনে নামা লুক রাইট দলকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন। জাকির হোসেন (২০), মুশফিকুর রহিম (৮) ও জেমস ফ্রাংকলিনের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে তিন অংকের ঘরে নিয়ে যান। দলীয় ১২৩ রানে পঞ্চম উইকেট হিসেবে ফ্রাংকলিন আউট হওয়ার পর অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির সঙ্গে জুটি গড়েন লুক রাইট। এ জুটিতে ১০ রান যোগ হতেই পেসার সাইফুদ্দীনের বলে হাসান আলীর ক্যাচ হন লুক রাইট (৪৩)। ড্যারেন স্যামি ব্যাট হাতে মাঠে নামার পরই দ্রæত রান সংগ্রহের দিকে মনোযোগ দেন। ইনিংসের শেষ ওভারে পেসার সাইফুদ্দীনের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিয়ে ৩২ রান তুলে নেন স্যামি। এরফলে দল নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৮৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করতে সক্ষম হয়। স্যামি মাত্র ১৪ বলে ছয়টি বিশাল ছক্কা ও একটি চারের সাহায্যে ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সফল বোলার ছিলেন সাইফুদ্দীন। কিন্তু শেষ ওভারের ওই দুঃসহ স্মৃতির কারণে বিপিএলের খরচে বোলারের খাতায় নাম উঠে যায় তার। প্রথম তিন ওভারে তার বোলিং ফিগার ছিল ১৮ রানে তিন উইকেট। ড্যারেন স্যামির ব্যাটিং ঝড়ের পর সাইফুদ্দীনের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় চার ওভারে ৫০ রানে তিন উইকেট!
ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ওই এক ওভারেই দেয়া ৩২ রানের খেসারত দিতে হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। এরমধ্যে রাজশাহী কিংসের পেসার মোহাম্মদ সামি বল হাতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করায় জয়ের নাগাল পায়নি কুমিল্লা। ১৫তম ওভারে আশার আলো হয়ে ক্রিজে থাকা কুমিল্লার অধিনায়ক তামিম ইকবাল (৬৩), অলোক কাপালি (০) ও সাইফুদ্দীনকে (০) ফিরিয়ে দিয়ে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন রাজশাহী কিংসের পেসার মোহাম্মদ সামি। সবমিলিয়ে চার ওভারে মাত্র নয় রান দিয়ে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নকিয়া মোস্ট এক্সসাইটিং প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হন সামি। এছাড়াও ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরেই বল হাতে জোড়া আঘাত হেনেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। দুটি উইকেট ডোয়াইন স্মিথেরও। ব্যাট হাতে তামিম ইকবাল তৃতীয় উইকেটে সোয়েব মালিককে (৪৫) নিয়ে ৮৭ রানের জুটি গড়েও দলকে রক্ষা করতে পারেননি। সামির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে তামিম ৪৫ বলে তিনটি বিশাল ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ৬৩ রান করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী কিংস : ২০ ওভারে ১৮৭/৭ (স্মিথ ১৯, মুমিনুল ২৩, রাইট ৪২, জাকির ২০, ফ্র্যাঙ্কলিন ১৪, স্যামি ৪৭*; আল-আমিন ১/৩২, হাসান ২/৩৮, সাইফউদ্দিন ৩/৫০)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৯.১ ওভারে ১৫৫/১০ (তামিম ৬৩, মালিক ৪৫, বাটলার ১৫, হাসান ১৬; সামি ৪/৯, মিরাজ ১/২৬, মুস্তাফিজ ২/৩২, ফ্র্যাঙ্কলিন ১/৩১, স্মিথ ২/২৭)।
ফল : রাজশাহী কিংস ৩০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ড্যারেন স্যামি (রাজশাহী)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন