মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

শচীনকে ছাপিয়ে স্মিথ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্মিথ, স্মিথ, স্মিথ। নিয়ন্ত্রণ, শক্তিমত্তা, উদ্ভাবন, পরিকল্পনা। স্টিভ স্মিথের ইনিংস যেন সবকিছুর মিশেল। আধুনিক বডিলাইন বা নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথ, কাজ হয়নি কিছুতেই। এমন নয়, ইংলিশরা বাজে বোলিং করেছেন। বরং তাদের বোলিং ছিল দারুণ, তবে স্মিথকে টলানো যায়নি কিছুতেই। তাকে আউটই করা গেল না! তার ওই মহাকাব্যিক ইনিংসটাই পাল্টে দিলো গ্যাবা টেস্টের দৃশ্য।
এক সেশনে মাত্র ১৭ রান। নব্বই থেকে শতরান ছুঁতেই সময় লাগল ঘণ্টাখানেক। ধৈর্য, দৃঢ়প্রতিজ্ঞা, সহজাত ব্যাটিংয়ের সঙ্গে আপোস, সাহসিকতা আর স্কিলের প্রদর্শনী। অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে অ্যাশেজের শুরুর টেস্ট রাঙালেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। তার ব্যাটে প্রথম ইনিংস অস্ট্রেলিয়া পেল ছোট্ট লিড। সেই লিড ছাড়ানোর আগেই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে ছোবল দিলেন জশ হেইজেলউড। গতকাল ব্রিজবেন টেস্টের তৃতীয় দিনে ৩২৮ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড দিন শেষ করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৩৩ রান নিয়ে।
১৪১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ। মাত্র ৫৭ টেস্টেই করে ফেললেন ২১ সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের মন্থরতম সেঞ্চুরি, কিন্তু নি:সন্দেহে সেরা সেঞ্চুরিগুলোর একটি। তবে দ্রæত ২১তম সেঞ্চুরিতে ভারতের মাস্টার বøাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারকে পেছনে ফেললেন অজি অধিনায়ক। এই কীর্তি গড়তে খেললেন ১০৫তম ইনিংস। ১১০তম ইনিংসে এমন মাইলফলকটি ছুঁয়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তী। এই তালিকায় সবার উপরে আছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান। মাত্র ৫৬ ইনিংসে ২১তম সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছিলেন ব্র্যাডম্যান। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ভারতের লিটল মাস্টার সুনীল গাভাস্কার। ৯৮তম ইনিংস ২১তম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন গাভাস্কার।
স্মিথ দিন শুরু করেছিলেন ৬৪ রান নিয়ে। নব্বই ছোঁয়ার পর নার্ভাস না হয়ে বরং ছিলেন আরও আঁটসাঁট। কাটিয়ে দেন প্রায় ১ ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ড্রাইভ খেলেই ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক। স্টুয়ার্ট ব্রডকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে সেঞ্চুরি করেই মাতেন উদযাপনে। ৪১৫ মিনিটে ২৬১ বলে মাত্র ৯টি বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি। তার আগের মন্থরতম সেঞ্চুরি ছিল ২২৭ বলে। অষ্টম উইকেটে স্মিথ ও কামিন্স গড়েন ৬৬ রানের জুটি। কামিন্সের লড়াই শেষ হয়েছে ৪২ রানে। এরপর হেইজেলউড ও লায়নকে নিয়ে শেষ দুই জুটিতে আরও ৫৩ রান তোলেন স্মিথ। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অলআউট হলেও স্মিথকে আউট করতে পারেনি ইংল্যান্ড। সাড়ে ৮ ঘণ্টা উইকেটে থেকে ৩২৬ বলে অপরাজিত ১৪১।
অধিনায়কের পারফরম্যান্সে উজ্জীবিত অস্ট্রেলিয়ানরা বোলিংয়ে চেপে ধরে ইংলিশদের। প্রথম ইনিংসে তুলনামূলক বিবর্ণ হেইজেলউড এবার সবচেয়ে উজ্জ্বল। ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ অ্যালেস্টার কুক ও প্রথম ইনিংসের নায়ক জেমস ভিন্সকে। মার্ক স্টোনম্যান ও জো রুট শেষ সময়টুকু কাটিয়ে দেন কোনোরকমে। তবে চতুর্থ দিন সকালেও তাদের পরীক্ষা তেতে থাকা অস্ট্রেলিয়ানদের সামনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড : ৩০২ ও ২য় ইনিংস ১৬ ওভারে ৩৩/২ (কুক ৭, স্টোনম্যান ১৯*, ভিন্স ২, রুট ৫*; স্টার্ক ০/১৪, হেইজেলউড ২/১১, কামিন্স ০/১, লায়ন ০/৭)।
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ১৩০.৩ ওভারে ৩২৮ (আগের দিন ১৬৫/৪) (স্মিথ ১৪১*, মার্শ ৫১, পেইন ১৩, স্টার্ক ৬, কামিন্স ৪২, হেইজেলউড ৬, লায়ন ৯; অ্যান্ডারসন ২/৫০, ব্রড ৩/৪৯, মইন ২/৭৪, ওকস ১/৬৭, বল ১/৭৭, রুট ১/১০)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন