মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আজ থেকে শুরু তীর-ধনুকের লড়াই

| প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দায়সারা আয়োজনে উদ্বোধন
স্পোর্টস রিপোর্টার : অনেকটা দায়সারা আয়োজনে উদ্বোধন হলো এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের ২০তম আসরের। গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃহৎ এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড আরচ্যারী ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাংগুয়ান কোসাভিন্তা, ওয়ার্ল্ড আরচ্যারী এশিয়ার সাধারণ সম্পাদক সাং হো ওম, বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সভাপতি লে: জেনারেল (অবঃ) মো: মইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল। কাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও সব বিভাগের বাছাইপর্ব দিয়ে তীর-ধনুকের লড়াই শুরু হবে আজ থেকে। এশিয়ান আরচ্যারির সর্ব বৃহৎ আসরে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে মাঠে নামবেন তীরন্দাজরা। বিশ^সেরা আরচ্যারদের সঙ্গে থাকছেন স্বাগতিক বাংলাদেশের ১৮ জন আরচ্যারও। তারা আগামীকাল থেকে নামবেন পদকের লড়াই।
ঢাকায় এই প্রথম বসলো আরচ্যারির এত বড় আসর। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৩৩টি দেশ অংশ নিচ্ছে যে আসরে। কিন্তু ঘরের মাঠে এত বড় আয়োজনে উদাসীন দেখা গেছে আরচ্যারি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের। টুর্নামেন্ট ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বা পরে এখানে যে কেউ প্রবেশ করেছেন বিনা বাধায়। শুধু তাই নয়, এই স্টেডিয়াম চত্বরের পরিবেশও নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। সকাল থেকে থেকে বিকাল অবদি এখানকার রাস্তা ছিল নিত্য দিনের মত যানজোটপূর্ণ। ফলে বিদেশী দলগুলোর টুর্নামেন্ট ভেন্যুতে প্রবেশ করতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। যদিও তারা নিরাপদেই মাঠে প্রবেশ করে। উদ্বোধনের পর অংশগ্রহণকারী দলগুলোর আরচ্যাররা তীর-ধনুক নিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়েন। তাদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। বিকাল পর্যন্ত চলে এই অনুশীলন। এরপরই শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে আয়োজন হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সেখানেও বহিরাগতদের প্রবেশে বাঁধা দেয়া হয়নি।
অলিম্পিক স্বর্নজয়ী দক্ষিন কোরিয়ার পুরুষ আরচ্যার লি সিয়ং-ইয়ন ও নারী আরচ্যার কী বো-বে খেলছেন এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে। সব দেশের আরচ্যারদের জন্য প্রধান সমস্যা বাতাস। এই সমস্যার কথা তিনদিন আগে স্বাগতিক দলের কৃতি আরচ্যার রোমান সানাও বলেছিলেন। স্বাগতিক হয়েও টুর্নামেন্ট ভেন্যুতে বেশ ক’দিন অনুশীলন করতে না পারার আক্ষেপ থেকেই গেলো বাংলাদেশীদের। টঙ্গীতে ফেডারেশনের নিজস্ব মাঠে স্বাগতিক আরচ্যাররা গত কয়েকমাস বেশ ভালোভাবে অনুশীলন করলেও এতে সন্তুষ্ট নন দেশসেরা আরচ্যার রোমান সানা। তিনি বলেন,‘টঙ্গীতে ভালোভাবে অনুশীলন চালিয়ে গেলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অন্তত দশ দিন অনুশীলন করতে পারলে আরেকটু ভালো হতো।’ পুরুষ বিভাগে সবার প্রত্যাশা এই রোমান সানাকে ঘিরে। মেয়েদের নিয়েও আশা বাংলাদেশ দলের অন্যতম কোচ মোহাম্মদ জিয়াউল হকের। তিনি বলেন,‘মেয়েদের অনুশীলনে আমি সন্তুষ্ট। তারা যদি আসল লড়াইয়ে এভাবে খেলে, তাহলে ভাল কিছৃু করে দেখানো সম্ভব।’
আসরের ১০টি ইভেন্টে ৩০টি পদকের জন্য ২৮৬ জন আরচ্যার লড়ছেন। ইভেন্ট গুলো হলো -রিকার্ভ পুরুষ দলগত, রিকার্ভ নারী দলগত, রিকার্ভ পুরুষ একক, রিকার্ভ নারী একক, কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত, কম্পাউন্ড নারী দলগত, কম্পাউন্ড পুরুষ একক, কম্পাউন্ড নারী একক, রিকার্ভ মিশ্র দলগত এবং কম্পাউন্ড মিশ্র দলগত। রিকার্ভ ডিভিশনের পুরুষ বিভাগে ২৬ দেশের ৪২ জন, মহিলা বিভাগে ২১ দেশের ২৬ জন, কম্পাউন্ড ডিভিশনের পুরুষ বিভাগে ১৭টি দেশের ৪৬ জন, মহিলা বিভাগে ১৩ দেশের ৩৩ জন, কন্টিনেন্টাল কোয়ালিফিকেশন টুর্নামেন্টে রিকার্ভ ডিভিশনে বালক বিভাগে ১২টি দেশের ২৫ জন এবং বালিকা বিভাগে সাত দেশের ১৫জন আরচ্যার অংশ নিবেন। এছাড়া মিশ্র দলগতভাবে রিকার্ভ ডিভিশনে ১৮টি দেশ এবং কম্পাউন্ড ডিভিশনে ১৩টি দেশ অংশগ্রহণ করছে।
গত আসরের মত এবারও ফেভারিট দক্ষিন কোরিয়া। তবে কোরিয়ানদের রাজ্যে এবার হানা দিতে চান ভারদের দ্বীপিকা কুমারি। ২০১০ সালে এসএ গেমস খেলতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন দ্বীপিকা। রিকার্ভ ইভেন্টে খেলা এ নারী আরচ্যার গত দু’টি অলিম্পিকে খেলেছেন। ২০১২ অলিম্পিকে প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়েছিলেন। গত বছর রিও অলিম্পিকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তার মূল্য লক্ষ্য ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে স্বর্ন জেতা। এবার বাংলাদেশ থেকে সফল হয়ে দেশে ফিরতে চান ২০১০ সালে কমনওয়েলত গেমসে দু’টি স্বর্ন জেতা দ্বীপিকা। বাংলাদেশের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানায় দলগুলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন