সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

ধা রা বা হি ক মসনবী শরীফ

মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.

| প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান
২৮৪. জ্বালা-পোড়া বাড়ছে কেবল ঘুম আসেনা চক্ষে আর
মন ভরে যায় অবসাদে, নেতিয়ে পড়ে শরীর তার।

২৮৫. আল্লাহর নিকট বাদশার প্রার্থনা ও সুচিকিৎসক প্রাপ্তি

২৮৬. বাদশা যখন ভিষকগণের অক্ষমতা দেখতে পান
খোদার মদদ চাইতে তখন মসজিদে খোদ দৌড়ে যান।

২৮৭. মেহরাবের পার্শ্বে গিয়ে লুটে পড়েন সিজদাতে
ভিজে গেল মিত্তিকা তাঁর হৃদয় গলা অশ্রæতে।

২৮৮. ফানার জগৎ থেকে রাজা ফিরে এসে বাস্তবে
মগ্ন হলেন আল্লা’পাকের প্রশংসা ও স্তবে।

২৮৯. বলল : প্রভু! তোমারই দান রাজত্ব এ সালতানাত
সব কিছুই তোমার জানা, কী বলব আর হে পাক্যাত।

২৯০. সর্ব কালের সব বিপদের শরণ তুমি, ঘুচাও ক্ষত
ভুল করেতো ফেলছি আমি চিনতে সঠিক মুক্তি-পথ।

২৯১. যদিও তুমি বলছ আমি জানি হৃদের গুপ্ত ভেদ
তেমনি আবার বলছ আমায় জানাও মনের দুঃখ খেদ।

২৯২. হৃদয় মথি কান্না উথাল হলো যখন বুক রাজার
খোদার দয়া-সিন্ধু মাঝে এলো তথ ভর জোয়ার

২৯৩. বক্ষভরা কান্না-নিয়ে যখন তিনি নিদ্রা যান
স্বপ্ন মাঝে বৃদ্ধকে এক সম্মুখে তার দেখতে পান।

২৯৪. বৃদ্ধ বলেন : পুরবে আশা, নেই কোনই ভাবনা আর
আগামীকাল তোমার কাছে আসবে চলে দূত আমার।

২৯৫. সত্য জেনো আগন্তুকে, আস্থা রেখো তাঁর ওপর
বিশ্বাসী সে, দ্রষ্টা সঠিক হাকিম অতি শক্তিধর।

২৯৬. দেখতে পারে তিলিস্মাতী চিকিৎসা সে ডাক্তারের
পাঁচনে তঁর দেখতে পাবে শক্তি খোদায়ী কুদরতের।

২৯৭. স্বপ্ন দেখে টুটিল নিদ, ঘুচল মনের হা-হুতাশ
বাদশা এবার বাদশা হলো, রইল না আর দাসীর দাস।

২৯৮. ছাই করিয়া রশ্মি তারার উজাল করে পূব গগন
হাসল রবি হলো হাযির প্রতীক্ষিত শুভক্ষণ।

২৯৯. ‘মনযারাতে’২ আসন গেড়ে করতে ছিলেন ইন্তেযার
ফলবে কখন বাস্তবেতে রহস্যময় স্বপ্ন তার।

৩০০. দেখেন তিনি জনৈক সুধী সৌম্য সুধীর পুন্যশ্লোক
আসছে যেন ছায়া ভেদি দীপ্ত উজাল সূর্যালোক।

৩০১. আসছে চলেÑ নভোনীলে হাসছে যেন নওহেলাল
আসছে বুনে কল্পনাতে আলো-ছায়ার ইন্দ্রজাল।

৩০২. কল্পনাতো মন-গহীনে নিরাবয়ব যেমন ‘নাই’
অথচ এ কল্পনাতেই চলছে নিখিল বিশ্বটাই।

৩০৩. সন্ধি লড়াই, শান্তি সবই, ফলাফল এ কল্পনার
কল্পনারই কারণে সবÑ লজ্জা, গরব, অহংকার।

৩০৪. খেয়াল ধেয়ান কল্পনা যা ফন্দি ওলী-দরবেশের
প্রতিচ্ছবি কেবল এসব খোদায়ী বাগের চাঁদ মুখের।

৩০৫. বাদশা যে রূপ দেখেছিলেন স্বপ্নাবেশে কল্পনার
চেহারাতেও মেহমানের প্রতিচ্ছায়া দেখেন তাঁর।

৩০৬. ওলীর মাঝে বিচ্ছুরিত হয় খোদায়ী নূর-আলোক
সেজন কেবল দেখে সে নূর রয়েছে যার মনের চোখ।

৩০৭. দূর থেকে ওই খোদার ওলী হলেন যখন দৃশ্যমান
বিচ্ছুরিত হচ্ছিল তাঁর শরীর থেকে আলোর বান।

৩০৮. দৌবারিকের বদলে শাহ্ স্বয়ং আগান ফুল্ল মন
গায়বী মেহমানে গিয়ে জানান স্বাগত সম্ভাষণ।

৩০৯. দু’জনাই সাগরচারি, সন্তরণে শক্তিমান
বিনে সুতার বন্ধনেতে শক্তবাধা উভয় প্রাণ।

৩১০. তৃষ্ণা-কাতর একজনা আর পানের পানি অন্য জন
শরাব নেশায় একে বেঘোর, অন্যে শরাব তার সদন।

৩১১, ওই দাসী নয়, মাশুক ছিলে তুমিই আমার ধরার মাঝ
এইতো নিয়ম, একটি কাজের কার্যকারণ অন্য কাজ।

৩১২. আমি যেন ওমর, তুমি মিসাল নবী মোস্তফার
তোমার সেবায় বিলিয়ে দেব জীবন-পরান সব আমার।

৩১৩. আদবের সুফল ও বেয়াদুবির কুফল

৩১৪. তাওফীক চাই তোমার দ্বারে শিষ্টাচারের হে মোর রব
তোমার দয়াÑ ফযল থেকে বঞ্চিত হয় বে-আদব।

৩১৫. অশিষ্টÑ অনিষ্ট-ক্ষতি করে না কেবল নিজের
বরং সে হয় ক্ষতির কারণ বিশ্বজগৎ সংসারের।

৩১৬. আকাশ থেকে আসত খাবার যমানায় হযরত মূসার
চেষ্টা কোশেষ খরিদ ছাড়া দয়াতে মহান খোদার।

৩১৭. কিন্তু নবীর কওমে ছিল ধৃষ্ট বেয়াদবের পাল
ভালোটা ত্যাগ করে তারা বললো কোথা রসুন, ডাল ?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন