বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিএনপি প্রযুক্তি বিকাশে ছিল ঘোরবিরোধী

দেশের প্রথম সফটওয়্যার পার্ক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 উদ্বোধন করা হলো দেশের প্রথম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পার্কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রযুক্তির বিকাশে ছিল ঘোর বিরোধী। তারা ব্যস্ত ছিল ভোগ বিলাসে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে তারা দেশে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতির সুযোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে তাদের কোন অবদান ছিল না। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। কিন্তু জনগণ সেই সুযোগ দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সৃষ্টি করে তারা ধ্বংস করতে পারে না। তাই আওয়ামী লীগ সবসময় উন্নয়ন করে ও অগ্রগতির কথা ভাবে। আর বিএনপি-জামায়াত ধ্বংসের রাজনীতি করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে জনগণকে প্রযুক্তির সেবায় এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তি জ্ঞাননির্ভর করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এবার ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছি। এখন আর কেউ ডিজিটাল নিয়ে ব্যঙ্গ করতে পারে না। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা শুরু করেছি, শুধু রাজধানীভিত্তিক নয়, আমাদের লক্ষ্য তৃণমূল পর্যায়ে যাওয়া। সফটওয়্যার তৈরি, কল সেন্টার সেবা, ফ্রিল্যান্সিং, গবেষণা ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ হবে এই পার্কে। সেখানে খুলনা বিভাগের দশ জেলার পাঁচ হাজার তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই জেলায় বিশ্বমানের একটি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক স্থাপনের প্রতিশ্রæতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চার বছরের মাথায় ২০১৪ সালের এপ্রিলে বেজপাড়া শঙ্করপুর এলাকায় ২ লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট জমির ওপর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ১৫ তলার মূল ভবনের পাশাপাশি তিন তারকা মানের একটি ১২তলা ডরমেটরি ভবন রয়েছে। জাপানি উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ডরমেটরি ভবনের ১১ তলায় তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের একটি জিম। সেই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক কনভেনশন সেন্টার ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে করা হয়েছে ৩৩ কেভিএ পাওয়ার সাব-স্টেশন। ইতোমধ্যে জাপানের দু’টি কোম্পানিসহ ৫৫টি কোম্পানিকে পার্কে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে তরুণদের বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে পুরো একটি ফ্লোর। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি আয় ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য পূরণে এই পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো মনে করি এটা আমাদের রফতানিতে সব থেকে বড় অবদান রাখতে পারবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে লক্ষ্য স্থির করে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকাকে সুনির্দিষ্ট করেই তৈরি করতে চাচ্ছি এবং সেই কাজটি আমরা করে যাচ্ছি। যশোরে নিজের নামে গড়ে তোলা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধনে শেখ হাসিনা বলেন, বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে পাশাপাশি আমাদের দেশটাকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তোলার একটা ধাপ অতিক্রম করতে পারলাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। শুধু যশোর নয়, ওই অঞ্চলের ১৩ জেলার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো। এতে মেধা ও জ্ঞাননির্ভর অর্থনৈতির চাকা সচল হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক সহ উর্দ্বতন কর্মকর্তাগন। অপরদিকে যশোর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিরিনা খাতুন, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী নাজিফা তাসনিম শেফা, যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছাত্র ধীমান আল হামিদ, আইটি প্রফেশনাল অনএয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিইও শাহীন আজাদ, আমরা নেটওয়ার্কের এমডি সৈয়দ ফরহাদ আহমেদ। উদ্বোধনের সময় যশোরে সফটওয়্যার পার্কে উপস্থিত ছিলেন যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিতকুমার রায়, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম, প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) জাহাঙ্গীর আলম, যশোর জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন শিকদার।
যশোর নাজিরশংকরপুরে স্থাপিত ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) জাহাঙ্গীর আলম জানান, সফটওয়্যার তৈরি, কল সেন্টার সেবা, ফ্রিল্যান্সিং, গবেষণা ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ হবে এই পার্কে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর তরুণদের টার্গেট করে এই পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এই অঞ্চলের তরুণরা সফটওয়্যারভিত্তিক কাজ করে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, দেশকে এগিয়ে নেবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কবির ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:১৬ এএম says : 0
অপরের সমালোচনা না করাই ভালো
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন