দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রা বন্দরের মূল চ্যানেলে ক্যাপিটাল ও রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিংয়ের কাজ বাস্তবায়ন করবে যৌথ কোম্পানি। এ লক্ষ্যে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল একটি যৌথ কোম্পানি গঠন করবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে যৌথ কোম্পানি গঠন সংক্রান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জাহাঙ্গীর আলম এবং জান ডি নুলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান পিটার ডি নুল। চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সরকারি দলো এমপি মাহবুবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: আবদুস সামাদ, দিল্লিস্থ বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত জান লুইক্স। ৩৬.৫ নটিকেল মাইল চ্যানেলের প্রথম পর্যায়ে টার্নিং বেসিনে ৯ মিটার এবং টার্মিনাল এলাকায় ১১ মিটার গভীরতায় ড্রেজিংয়ের জন্য প্রাক্কলিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩২.৪৩ মিলিয়ন ইউরো। সার্বিকভাবে চ্যানেলের প্রশস্ততা হবে টার্নিং বেসিনে ১২৫ মিটার এবং টার্মিনাল এলাকায় ৪০০ মিটার। প্রথম পর্যায়ের ড্রেজিং শেষে ১১ মিটার গভীরতার জাহাজ মূল বন্দরে প্রবেশে সক্ষম হবে। ভবিষ্যৎ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২ মিটার এবং তৃতীয় পর্যায়ে ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ মূল বন্দরে প্রবেশের ব্যবস্থা হরা হবে। কোম্পানি গঠনের শেয়ার হবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ৫১% এবং জান ডি নুল-এর ৪৯%। প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর। প্রাক্কলিত ইক্যুইটি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ ৫৪.৩১ মিলিয়ন ইউরো, জেডিএন ৫২.১৮ মিলিয়ন ইউরো। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় লালুয়া ইউনিয়নে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা বন্দরের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট পায়রা বন্দরের বহির্নোঙর থেকে পণ্য খালাসের মাধ্যমে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ২০১৬ সালের ২৫ মে ঢাকায় পায়রা সমুদ্রবন্দরের মূল চ্যানেলে ক্যাপিটাল ও রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিংয়ের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল-এর মাঝে একটি সমঝোতা স্মারকপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, পায়রা বন্দরের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১৯টি কম্পোনেন্টের সব ক’টির উন্নয়ন কার্যক্রম একই সাথে গ্রহণ করা জরুরি। এ লক্ষ্যে ড্রেজিং কার্যক্রম সম্পন্ন হলে পায়রা বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল প্রকল্পের উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান হবে। মন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে পায়রা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে ১১টি জাহাজ বহির্নোঙরে এসেছে। এতে সরকারের রাজস্ব এসেছে ১৮ কোটি টাকা আর পায়রা বন্দর আয় করেছে ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। তিনি বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে পায়রা বন্দরে একটি কয়লা বা বাল্ক টার্মিনাল ও একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল চালু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন