চট্টগ্রাম-প্রযুক্তি ও প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাউজান চুয়েট) এক শিক্ষার্থী ছিনতায়ের শিকার হওয়ার জের ধরে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে ৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা। এই সময় তারা ১৫ আটোরিক্সা চালিত সিএনজি ২টি বাস, ২টি ট্রাক, ১টি পিকআপ ভাঙচুর করে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেপায়েত উল্লাহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধ তুলে দিতে সক্ষম হলেও উশৃঙ্খল শিক্ষার্থীরা সিএনজি চালক ও স্থানীয়দের বিরোধী উত্তেজনামূলক সেøাগান দিতে থাকে। পরে ঘটনাস্থলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজা, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) জোনায়েদ কবির সোহাগ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজনা প্রশমিত করে। তারা চুয়েটের পাঁচজন শিক্ষার্থীর প্রতিনিধির সাথে আলোচনা বৈঠক বসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। ছিনতায় সহ অপকর্ম রোধ করতে রাউজানে প্রতিটি আটো রিক্সা চালকের জন্য ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক করা হবে এবং ইউনিফর্মের পেছনে তাদের নাম থাকতে হবে বলে জানান ইউএনও শামীম হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় হঠাৎ করে চুয়েট শিক্ষার্থীরা কাপ্তাই সড়কে নেমে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এই সময় রাস্তার দুই পাশে প্রায় ৫ শতাধিক গাড়ির হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়ে। অনেক নারী শিশু-কিশোর কাঁদে ও মাথায় বোঝা নিয়ে পায়ে হেটে গন্তব্যে ছুটে যান। সাড়ে ৭টার দিয়ে স্থানীয় কিছু লোকজন এসে অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলে চুয়েট শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ইইই বিভাগের ১৪তম ব্যাচের তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টায় আরিফুল ইসলাম নামে ইইই বিভাগের ১৪তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথা হতে চুয়েট ক্যাম্পাসে আসার পথে দমদমা নামক স্থানে সিএনজি চালক ও তার সহযোগীরা ছুরি ধরে তার কাছে থাকা নগদ ২৫ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপ, ১টি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। এই ঘটনার বিচারের দাবি সহ সন্ধ্যার অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি রোধ সহ নানা দাবিতে তারা সন্ধ্যা ৬টায় শান্তিপূর্ণ ভাবে সড়ক অবরোধ করে সিএনজি চালক সমিতির কর্মকর্তাদের এসে আলোচনার মাধ্যমে সমধানের আহŸান করি।
এদিকে মঙ্গলবার রাতের ঘটনার জের ধরে গতকাল বুধবার ভোর সকাল থেকে কাপ্তাই সড়কের রাউজান,রাঙ্গুনীয়া ও হাটহাজারীর অংশে অবরোধের ডাক দেয় কাপ্তাই বাস মালিক সমিতি ও সিএনজি অটো রিকশা সমিতি। সকাল থেকে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ অবরোধের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে। অনেক যাত্রী সাধারন পায়ে হেটে নিজ কর্মস্থলে ছুটে যান। চুয়েট ক্যাম্পাসে যে কোন ঘটনা কেন্দ্র করে কাপ্তাই সড়কে প্রায়ইশ গাড়ি ভাঙচুর সহ রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে চুয়েটের উশৃঙ্খল ছাত্ররা। গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দুপুর দিকে হালকা কয়েকটি সিএনজি অটো রিকশা চলাচল করলেও ভারি যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ। চুয়েট সহ আশ পাশের তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র ও পাহাড়তলী চৌমুহনী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কাপ্তাই বাস চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর আলী জানান, কারণে অকারণে চুয়েট শিক্ষার্থীরা আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। ক্ষতিপূরণ সহ এই বিষয়ে সুরহা না হলে আমরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য কাপ্তাই সড়কে বাস, অটোরিক্সা বন্ধ থাকবে। এদিকে গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় বাস মালিক সমিতি ও চুয়েট প্রসাশনের সাথে সমাজোতা বৈঠক চলছে বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন