একনেকে ১২৪১৫ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
রাজধানীর যানজট কমাতে মিরপুর এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে একটি উড়ালসড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। উড়ালসড়কের পাশাপাশি ওই এলাকার রাস্তার প্রশস্ততাও বাড়ানো হবে। মিরপুরের ইসিবি চত্বর থেকে কালসী পর্যন্ত ৬১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজশাহীর প্রবেশদ্বার তালাইমারী চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কয়ার নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৬০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার মাধ্যমে তাঁর প্রতি সম্মান ও ভালবাসা প্রদর্শন; মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজš§কে সঠিক শিক্ষা দান; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্ন, দর্শন ও সুদুর প্রসারি ভাবনা সম্পর্কে ধারণা পেতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
পানি সরবরাহে আর্সেনিকের ঝুঁকি কমাতে এদিন একনেক সভায় আলাদা একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এক হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি পেতে সক্ষম হবে এবং প্রকল্প এলাকায় প্রতি ৭৫ জনের জন্য একটি নিরাপদ পানির উৎস নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে মোট ১৩ টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১২ হাজার ৪১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এসব প্রকল্পে ১১ হাজার ৮২২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে অবশিষ্ট ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আর্সেনিকমুক্ত পানি পান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জলাধার পর্যাপ্ত জলাধার নির্মানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সব জলাধারে পানি ধরে রেখে কৃষি কাজেও ব্যবহার করা যাবে। এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, মিরপুরে নতুন ফ্লাইওভারটি খুব সুন্দর হবে। এটি রাজধানীর ওই অংশের যানজট নিরসনে বিশেষ ভ‚মিকা রাখবে। এ সময় মন্ত্রী আরও জানান, যানজট কমাতে ঢাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সম্প্রতি পৃথক একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়। গতকাল অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে প্রকল্পের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া অনুমোদন পাওয়া উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধার করা ভ‚মির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষায় নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫০৯ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলায় সাঙ্গু এবং ডলু নদীর তীর সংরক্ষণে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৩৩ কোটি টাকা।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকাস্থ সোহারওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৫ কোটি টাকা। ১২৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরে খুলনা শহরে এডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ, ৮৪৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ইস্টাবিলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন, ২১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মন্দির ভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম, ১০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে লালমনিরহাট টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন, ৯০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল-জাফলং জাতীয় মহাসড়কের জৈন্তা হতে জাফলং পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন এবং ৫ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরে নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন