ষ ৬ ফেব্রুয়ারী সন্ত্রাসবিরোধী মানববন্ধন
ষ শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবি সচেতন শিক্ষার্থীদের ষ আগামীকাল প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ধর্মঘট
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে সৃষ্ট অপ্রীতিকর ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচারের দাবিতে আগামী ৩১ জানুয়ারী অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র সমাবেশ ডেকেছে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। গতকাল মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের বিষয়ে কিছু শিক্ষার্থী মাননীয় উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা উপাচার্যকে উদ্দেশ করে অশালীন স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে উপাচার্য তাদের ভেতর থেকে পাঁচ জন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করতে চাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অসম্মতি জানিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দিতে থাকে। ফলে বিভিন্ন হল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসে ভীড় জমাতে থাকে। এক পর্যায়ে দুই দল সাধারণ শিক্ষার্থীর মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। যার ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পন্ড হয়ে যায়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় নামধারী আন্দোলনাকারী বাম ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে ভাঙচুর চালায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এরপর ঢাবি কর্তৃপক্ষ ৫০ জন ভাঙচুরকারীর নামে অজ্ঞাত মামলা করে। যার ফলশ্রুতিতে ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অপ্রীতিকর ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সংবদ মাধ্যমে দেখা যায় এই দুই সংঘঠনের নেতারা ঢাবি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তার সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়, লাঞ্ছিত করা হয়। সেখবর সাধারণ শিক্ষর্থীদের কানে পৌঁছালে তারা উপাচার্যকে উদ্ধার করেন। যার ফলে আন্দোলনরত দুই দলের নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতারা দুই পক্ষের সংঘর্ষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেয়। যার ফলে আন্দোলনরত দুই বাম দলের নেতারা ছাত্রলীগের নেতাদের ওপর চড়াও হয়। এতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন আহত হন। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ছাত্রী বোনদের ওপর নির্যাতন চালায়।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা ছাত্রলীগের ৫ দফা দাবি ও ৩টি কর্মসূচি ঘোষনা করে।
৫ দফা দাবি হলো; শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও প্রশাসন ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ, সক্রিয় সব ছাত্র সংঘঠনের সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা ও দোষীদের শাস্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে অবিলম্বে পরিবেশ পরিষদ চালু করা, অবিলম্বের ডাকসু নির্বাচন তফসিল ঘোষণা, বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে বিরাজমান সমস্যা দ্রুত সমাধান।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের তিনটি কর্মসূচি হলো; আগামী ৩১ জানুয়ারি সন্ত্রসবিরোধী ছাত্র সমাবেশ, ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী মানববন্ধন এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
এদিকে এর পূর্বে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ সমর্থিত সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ। ভিসিকে লাঞ্ছিত করা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন তারা।
গতকাল বিশ^বিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ‘সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের আহŸায়ক আব্দুল্লাহ আল নোমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল্লাহ আল নোমান সুমন বলেন, ‘২৩ জানুয়ারী দুপুর ১২ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বাম ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কিছু অছাত্র ও বহিরাগত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় রেজিষ্টার ভবনে উপাচার্য অফিস ঘেরাও করে। তারা রড, হেক্সো সহ দেশীয় অস্ত্র ব্যাবহার করে ভিসি অফিসের প্রবেশ পথে তিনটি গেট ভেঙ্গে প্রবেশ করে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং তাকে অশ্লীলভাবে গালাগালি ও লাঞ্ছিত করে। উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে ছাত্রলীগ ও বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর আগেও বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রক্টরকে লাঞ্চিত করে।’
তিনি আরো বলেন, আমরা বিশ^বিদ্যালয়ে কোন ক্রমেই সেশনজট চাইনা। বিগত এক দশকের ন্যায় বিশ^বিদ্যালয় নিয়মিত তার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে সেটিই আমাদের কাম্য।
অপরদিকে আগামীকাল প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পূর্বঘোষিত সারাদেশে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট কর্মসূচি রয়েছে। এর সাথে একাত্মতা পোষন করা সহ সফল করার ঘোষনা দিয়েছে বাম সমর্থিত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ। আর ছাত্রলীগ বলছে যে কোন মূল্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন