মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.
কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান
৪৫২. বুঝতে পেরে সব ছলনা স্বর্ণকারের দগ্ধমন
আফসোসে সে বলতে থাকে নিজকে করে সম্বোধন :
৪৫৩. হায়! আমি সেই খোশবুওয়ালা মেশক-নাভি বন হরিণ
হত্যা করে যাদের লোভে শিকারীরা হৃদয়হীন।
৪৫৪. হায়! আমি সেই মনোমোহন চামড়াধারী বন শেয়াল
হত্যা করে শিকারীরা খশায় যাদের গায়ের ছাল।
৪৫৫. হায়! আমিতো ফান্দে পড়া দুর্ভাগা সেই হস্তি, যার
শিকারীরা হত্যা করে উপড়িয়ে নেয় দন্ত হাড়।
৪৫৬. তুচ্ছলোভে করছে আমায় হত্যা যেজন বদলা তার
পেতেই হবে বৃথা বিফল যাবেনা মোর রক্তধার।
৪৫৭. আজকে আমার, কালকে তোমার, রক্ত আরো রক্ত চায়
শুধতে হবে ঋণ আজিকার থাকো তারই অপেক্ষায়।
৪৫৮. প্রভাতকালে বস্তু-ছায়া হোক যতোই দীর্ঘকায়
ক্রমান্বয়ে ক্ষুদ্র হয়ে আসেই ফিরে নিজের গায়।
৪৫৯. দুনিয়াটা পাহাড় এবং ধ্বনি যেন কাজ মোদের
আসবে ধ্বনির প্রতিধ্বনি ধাক্কা খেয়ে পর্বতের।
৪৬০. এসব বলে মাটির তলে গেল চলে স্বর্ণকার
বিমারী, শোক, প্রণয় থেকে মুক্তি পেলো কানিজ তার।
৪৬১. মরণশীলে যায় না বাঁধা অনন্তকাল প্রেমডোরে
মরণ-পরে ফিরে আবার কেউ আসেনা এই দোরে।
৪৬২. কেবল অজর অমর অসীম চিরস্থায়ী সত্তা যার
সদ্য ফোটা ফুল থেকেও সদা সজীব প্রণয় তাঁর।
৪৬৩. অতিন্দ্রিয়, জ্যোতির আধার, প্রেমের আকর চিরস্থির
শরাব পিয়ে হও গো বিভোর সেই মাশুকের, সেই সাকীর।
৪৬৪. প্রেমে যাহার মগন বিভোর ধন্য হলেন মুরসালীন
সে প্রেমে হও আত্মহারা, নিমজ্জিত, মাস্ত, লীন।
৪৬৭. বলোনা, ওই শাহের কাছে কেমনে যাব ? আমরা দ্বীন
মহৎ তিনি, দয়ার দিঠি লাভ করা তাঁর নয় কঠিন।
৪৬৮. স্বর্নকারকে হত্যা করা হয়েছে ইল্হামী নির্দেশে
৪৬৯. ভেবোনাকো গায়বী হাকিম খামখেয়ালে, স্বার্থে ভয়ে
হত্যা করেন স্বর্ণকারে, এরূপ নয় তা এরূপ নয়।
৪৭০. করেননি তা গায়বী হাকিম স্বার্থেও ওই শাহানশার
সব করেছেন ইল্হামে ও ইঙ্গিতেই খোদ খোদার।
৪৭১. খাজা খিজির হত্যা করেন যে ইল্হামে এক বালক
এই হাকিমের হত্যা কাজও সে ইল্হামে নেইকো শক্।
৪৭২. যেজন লভেন অহী তিনি মনোনীত খোদ খোদার
চলন বলন কার্য-কলাপ সবই সঠিক সত্য তাঁর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন