অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সেকেন্ড হোমের নামে দেশ থেকে অর্থপাচার ঠেকাতে আবাসন খাতে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এ সময় রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি রবিউল হক বলেন, কালোটাকা বিনিয়োগের সুবিধা ৫-১০ বছরের জন্য দিতে হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সুযোগ চাওয়া হয়েছে। দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ নির্মাণ শিল্প খাতের ১০৬টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নেন।
সংগঠনের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, দেশ থেকে সেকেন্ড হোমের নামে বিপুল অর্থপাচার হচ্ছে। অপ্রদর্শিত অর্থ দেশের আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলে ভবিষ্যতে এসব বিনিয়োগকারী করের আওতায় চলে আসবেন। বাজেটে শর্ত সাপেক্ষে এ সুযোগ দেওয়া হলেও কাজে আসছে না। কোনো প্রশ্ন ছাড়াই এ সুযোগ থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে।
তিনি বলেন, ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণী-বিতানে বিনিয়োগকারীদের আয়ের উৎস না খোঁজার বিষয়টি উল্লেখ করে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (বিবিবিবিবি) ধারা পুর্নপ্রবর্তন করতে হবে যা, ২০১১ সালে রহিত করা হয়।
আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলেও ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ আইনে ১৯ বিবিবিবিবি নামে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়। এতে বলা হয়, নির্ধারিত কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। অবৈধ ও অপরাধ সংগঠিত করে অর্জিত কোনো অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীকে অর্থের উৎস উল্লেখ করতে হবে। ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিস্ট্রেশনে গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, স্থানীয় সরকার কর ও মূসকসহ ১৪ শতাংশের ওপরে। এ কর ৭ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় অত্যধিক হওয়ায় ক্রেতারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। সার্কভুক্ত দেশে এ হার ৪ থেকে ৭ শতাংশ। সাপ্লায়ার ও ভেন্ডরের কাছ থেকে ভ্যাট ও উৎসে কর আদায়ের নামে ডেভেলপারদের কাগজপত্র জব্দ করা হয়। আরোপিত এ ভ্যাট ও কর সম্পর্কে আমরাও বুঝি না। তিনি আরো বলেন, একজন বাড়িওয়ালা, ঠিকাদারের কাছ থেকে এ ভ্যাট ও উৎসে কর নেওয়া যায় না। ভ্যাট ও আয়কর কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিয়ে তা আদায় করতে হবে। বিনা শুল্কে সব ধরনের অগ্নি নিরাপত্তা সামগ্রী আমদানি, আবাসন খাতের ক্রেতাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন, আবাসন নির্মাণকালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হারে বিদ্যুৎ ও পানির বিল নির্ধারণের দাবি জানান লিয়াকত আলী।
এ শিল্পকে বাঁচাতে শহর এলাকায় ৫ বছর ও শহরের বাইরে ১০ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া, বিনিয়োগে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ, অন্যান্য শিল্পের মতো শিল্প ঋণ দেওয়ারও আহŸান জানান তিনি।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ, এনবিআর সদস্য ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন