ইনকিলাব ডেস্ক : পাম ফল থেকে তেল আহরণের আধুনিক যন্ত্র না পেয়ে পাম গাছ কেটে ফেলছেন মেহেরপুরের চাষিরা। প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে গ্রিন বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার অনেক চাষি তাদের কাছ থেকে পাম গাছ কিনে লাগিয়েছিলেন। এরপর ওই এনজিও গাঁ ঢাকা দিলে বিপাকে পড়েন পাম চাষিরা। ভালো ফলন পেলেও বাজার এবং তেল তৈরির যন্ত্র না থাকায় এসব গাছ কোনো কাজে লাগছে না।
গ্রিন বাংলাদেশ এনজিওতে অনুপ্রাণিত হয়ে আশরাফপুর গ্রামের রুহুল আমিন ১৩ বছর আগে তার ১৫ বিঘা জমিতে দেড় হাজার পাম গাছের চারা রোপণ করেন। আরো অনেক চাষি লিখিত চুক্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চারা কেনেন। চারা রোপণের কয়েক বছরের পর আত্মগোপন করে এনজিওটি। ফলে পাম ফল বিক্রি ও তেল তৈরি নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েন এই পাম চাষিরা। রুহুল আমিনের মতো আমদহ, পিরোজপুর, বারাদী, আমঝুপি, কাথুলী, ধানখোলাসহ বিভিন্ন গ্রামের অনেক জমিতে পাম গাছ লাগিয়েছিলেন চাষিরা। তাদের সবার অবস্থা একই রকম।
জেলায় উৎপাদিত পাম ফল থেকে খুলনা বিভাগের ভোজ্যতেলের চাহিদা অনেকটাই মেটানো সম্ভব ছিল বলে মনে করেন জেলার পাম চাষিরা। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান কারখানা স্থাপনে উদ্যোগ না নেয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জানান। এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়সহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পাম ফল থেকে তেল উৎপাদনের কোনো আধুনিক যন্ত্রের সন্ধান দিতে পারেনি। ফলে কোনো উপায় না পেয়ে বাগান থেকে পাম গাছ কাটতে শুরু করেছেন অনেক ভুক্তভোগী।
২০০৯ সালে বারাদী এলাকায় মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের দুই পাশে পাম গাছের এক হাজার চারা রোপণ করে সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা। কিছু কিছু গাছে ফল এসেছে। বেশিরভাগ গাছে ফলের দেখা নেই। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে এখন চরম বিপাকে স্থানীয় ওই সংস্থাটি। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পাম চাষের বিষয়ে কৃষি অফিসের কিছুই করার ছিল না। তবে এখনো তেল তৈরির কারখানা স্থাপন করা গেলে পাম চাষিরা লাভবান হবেন। অন্যদিকে দেশের ভোজ্যতেল আমদানি নির্ভরতাও কমবে বলে মনে করছেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন