শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

লালমনিরহাটে আকীজের ৪ কারখানা বন্ধ ১০ হাজার শ্রমিক বেকার : প্রতিবাদ বিক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

লালমনিরহাট সংবাদদাতা : আকীজ কোম্পানি লিমিটেড-এর লালমনিরহাট জেলার ৪টি ফ্যাক্টরি বিনা নোটিশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টরির কাজ বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বকেয়া বেতন পরিশোধ ও দ্রæত ফ্যাক্টরি চালুর দাবিতে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা।
জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল শ্রমিকরা ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে আসলে জানতে পারে যে, ফ্যাক্টরি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিনা নোটিশে হঠাৎ করে ফ্যাক্টরি বন্ধ ঘোষণায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সাধারণ শ্রমিকরা। সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেনি। এ জেলায় ১৯৮৪ সালে আকীজ কোম্পানির ৪টি বিড়ি ফ্যাক্টরি গড়ে উঠে।
এতে জেলার প্রায় ১০ হাজার বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসব ফ্যাক্টরি বন্ধ ঘোষণা ও পূর্বের মজুরি না পাওয়ায় সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল দুপুরে একযোগে জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার দৈখাওয়া, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারীতে ২টি ও আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ির ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা পূর্বের মজুরি পরিশোধ ও দ্রæত ফ্যাক্টরি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করে। শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিক কর্তৃক ফ্যাক্টরি ভাঙচুরসহ অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়িতে অবস্থিত বিড়ি ফ্যাক্টরিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কর্মরত শ্রমিক আজিজার রহমান জানান, গত সপ্তাহের বকেয়া বিল এখনো আমরা পাইনি। আর মাত্র ১ দিন কাজ করলে শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতন পেত। এ অবস্থায় নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা চরম হতাশায় ভুগছি। বেতন না পেয়ে আমরা শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। দীর্ঘদিন থেকে এ কাজে নিয়োজিত থাকায় হঠাৎ করে অন্য কোনো কাজও করতে পারছি না। ফ্যাক্টরিতে ২৫ বছর যাবৎ কর্মরত শ্রমিক পনির উদ্দিন জানান, আমার পরিবারে ৮ জন সদস্য। সবাই আমার আয়ের উপর নির্ভরশীল। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগামী দিনগুলো কীভাবে কাটবে ভেবে পাচ্ছি না এবং জানতেও পারছি না কবে নাগাদ পুনরায় ফ্যাক্টরি চালু হবে। এভাবে কাজ বন্ধ থাকলে পরিবারের লোকজনসহ না খেয়ে থাকতে হবে। স্বামী পরিত্যক্তা নারী শ্রমিক ফাতেমা খাতুন জানান, প্রতিদিন কাজ না করলে ভাত জোটে না। এভাবে কাজ বন্ধ থাকলে আমরা খাব কী? তাই তিনি দ্রæত বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ফ্যাক্টরি চালুর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে আকীজ কোম্পানির সাপ্টিবাড়ী শাখার ম্যানেজার আবু তালেব বিনা নোটিশে ফ্যাক্টরি বন্ধ ও শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরি বকেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শ্রমিকদের মজুরির পরিশোধের ব্যাপারে বার বার ঊর্ধ্বতন কর্মপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে অজ্ঞাত কারণে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেয় কর্তপক্ষ। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি না পেলে এবং ফ্যাক্টরি চালু না করলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন