শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

নিয়ন্ত্রণহীন ডলার, কারণ খুঁজছে অর্থ বিভাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে চার টাকা ৫৯ পয়সা আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রফতানি আয় ও রেমিটেন্সের পরিমাণ না বাড়ায় ব্যাংকে ডলারের সঙ্কট তীব্র হয়েছে। গত বছরের শুরুতে আন্তঃব্যাংক ডলারের দর ছিল ৮০ দশমিক ৬৬ টাকা। গত বৃহস্পতিবার এই ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৮৫ দশমিক ২৫ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে ডলারপ্রতি দাম বেড়েছে চার টাকা ৫৯ পয়সা। এদিকে গত আট মাসে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ২৫ দশমিক দুই শতাংশ। একই সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে সাত দশমিক তিন শতাংশ।
ডলারের এই অব্যাহত দরবৃদ্ধি আর ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের প্রকৃত কারণ খুঁজছে সরকারের অর্থ বিভাগ। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ দুই সংকটের পেছনে অর্থপাচারের মতো কোনো কারণ আছে কিনা, তা-ও অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানা গেছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে বেকায়দায় পড়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিডলার ৭৯ টাকা হিসাবে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়েছেন অনেকেই। এখন বাজার থেকে ৮৩-৮৪ টাকার বেশি দরে ডলার কিনে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। আবার আমদানি ব্যাপক হারে বাড়লেও রফতানি ও রেমিটেন্স সেই হারে বাড়ছে না। এতে ডলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে মুদ্রাবাজারে। ডলারের এই সংকট মেটাতে গিয়ে চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত ১২০ কোটি ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার ব্যাংক খাতে আমানতের তুলনায় ঋণ প্রবৃদ্ধি অনেক বেড়ে গেছে। ফলে ব্যাংক খাতে ডলারের পাশাপাশি নগদ টাকার সংকটও সৃষ্টি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, আমদানি ব্যয় বেড়েছে এটা বাস্তব। এ জন্য ডলার সংকট দেখা দিতেই পারে। তবে যে রকম সংকটের কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবতা হয়তো ভিন্ন। এখানে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য কমে ৯২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকায় নেমেছে। আগের বছরের একই সময়ে যা এক লাখ ২৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা ছিল। গত কয়েক বছরের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় উদ্বৃত্ত তারল্য কখনো এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার নিচে আসতে দেখা যায়নি। ব্যাংক খাতের বর্তমান তারল্য পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ বলে জানা গেছে। তবে এ অবস্থাকে অস্বাভাবিক মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেননা তারল্য সংকট বাড়ছে, কলমানি রেট স্বাভাবিক রয়েছে। নগদ অর্থের জন্য ব্যাংকগুলো একে অন্যের কাছে ধারদেনা করলে বা ঋণ নিলে কলমানি রেট বেড়ে যাওয়ার কথা কিন্তু তা ঘটছে না। ফলে প্রকৃত কারণ আসলে কী হতে পারে, তা অনুসন্ধান করতেই বিএফআইইউকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন