চট্টগ্রাম ব্যুরো : হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব ও দারুল উলুম হাটহাজারীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, পহেলা বৈশাখের দিন বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নামে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করা মুসলমনাদের ঈমান-আক্বীদা বিরোধী একটি অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিনে নারী পুরুষের মুখে উল্কি আঁকা, বড়বড় পুতুল, হুতোম পেঁচা, হাতি, কুমির, সাপ, বিচ্ছু, ও ঘোড়াসহ বিভিন্ন জীব-জন্তুর মুখোশ পরা, প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ একসঙ্গে অশালীন পোশাক পরে অশ্লীল ভঙ্গিতে ঢোল বাদ্যের তালে তালে নৃত্য করে র্যালি করার হিন্দুয়ানী যে রীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমানদের ওপর জোর করে চালু করা হচ্ছে, তা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। জুনাইদ বাবুনগরী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করার নির্দেশ দাতাদের নিকট প্রশ্ন রেখে বলেন, পহেলা বৈশাখে নতুন বছরের শোভাযাত্রায় কার কাছে মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে? জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তি কি মানুষের কোন কল্যাণ করতে পারে? তিনি বলেন, মুসলমানদের ইসলামী বিধি-বিধান মানতে হবে। ইসলামী শরীয়ত মতে কোন জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তির কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করলে ঈমান থাকবে না। মুসলমানদের আকীদা হলো ভাল-মন্দ, মঙ্গল-অমঙ্গল সবকিছুই মহান আল্লাহর হুকুমেই হয়ে থাকে। মুসলমানদেরকে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর নিকট। আমরা সবসময় সুরায়ে ফাতেহায় আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করি ‘হে আল্লাহ, আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি’। সুতরাং যেসব মুসলমান আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করে তাদের জন্য বিজাতীয় মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণসহ সকল অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকার জন্যে মুসলিম জনসাধারণের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেন, স্কুল কলেজের মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে ঈমান আকীদা বিরোধী সংস্কৃতি পালনে রাষ্ট্র কখনো বাধ্য করতে পারে না। এটা সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা বিরোধী। কারণ, বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বিদ্যমান আছে। এ অবস্থায় কেউ ক্ষমতার জোরে সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশের জনগণের ওপর ভিন্ন ধর্মের অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে পারে না। ভিন্ন ধর্মের রীতিনীতি দেশের শতকরা ৯২ জন মুসলমানের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালালে তার পরিণতি শুভ হবে না। তিনি বলেন, আমরা দেশীয় রীতি ও সংস্কৃতি বিরোধী নই। তবে বাঙ্গালী সংস্কৃতির নামে মুসলমানদের ঈমান হরণ করার কোন হিন্দুয়ানী আয়োজন হলে নিরব বসে থাকতে পারিনা। ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-সংস্কৃতি ধ্বংস করে বিজাতীয় সংস্কৃতি মুসলমানরা মেনে নিতে পারেনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন