নওগাঁয় একটি বে-সরকারী ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল অপারেশনে আল এখলাস (৮) নামের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখলাস জেলার আত্রাই উপজেলার দিঘা উত্তর পাড়া গ্রামের শুকবরের ছেলে। শিশুর স্বজনরা ও এলাকাবাসীরা ক্লিনিক ঘেরাও ও ক্লিনিকের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে তারা ডাক্তার ও ক্লিনিকের মালিকের বিচার দাবি করেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিক শাহ মোঃ নুরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বৈধ কাগজ পত্র ছাড়াই একটি বাসা ভাড়া নিয়ে অবৈধ ভাবে ক্লিনিক খুলে মাঝে মধ্যেই এমন মৃত্যুর শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিহতের পিতা শুকবর ও স্বজনরা জানান, গত শনিবার বেলা ৩টার সময় তার ছেলেকে নিয়ে গলায় টনসিল রোগ নিরাময়ের জন্য শহরের চকএনায়েত মহল্লায় বেসরকারী ক্লিনিক শাহ নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ আসাফুৎদ্দৌলা নিকট দেখায়। ডাক্তারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই ক্লিনিকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় অপারেশানের চুক্তিতে ভর্তি করায় বেলা ৩টার দিকে। টাকা বুঝিয়ে নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অপারেশান করায় ওই ডাক্তার। অপারেশনের পর রুগীর আর জ্ঞান ফিরে নাই। ডাক্তারকে বললে একটু পরে জ্ঞান ফিরবে বলে বিভিন্ন টালবাহানা করে। পরে ডাক্তার ওই রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। এ্যাম্বুলেন্সে রুগীকে তুলে দিয়ে ওই ডাক্তার, ক্লিনিকের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সবাই তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রুগীকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পূর্বেই রোগী মারা গেছে। তারা মৃত রোগীকে নিয়ে ভোরে ওই ক্লিনিকে এসে দেখে তালাবদ্ধ। নিহতের স্বজনরা ক্লিনিক ঘেরাও করে রাখে। অপারেশনের সময় কোন অজ্ঞানের ডাক্তার ছিল না। ওই ডাক্তারি শিশুটিকে অজ্ঞান করিয়েছিল। শিশুর স্বজনদের অভিযোগ শিশুকে অতিমাত্রার ডোজ দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। অপারেশন করার আগেই শিশু সুস্থ্য ও স্বাভাবিক ছিল। টনসিলের ব্যথা ছাড়া কোনই অসুখ ছিল না শিশু এখলাসের। ওই ডাক্তার ৫ বছর পূর্বে নওগাঁ হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে ওই ক্লিনিকে রোগী দেখতেন এখন রংপুরে মোডকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী হলেও সপ্তাহে শুক্রবার সন্ধ্য থেকে রোববার বেলা ১টা পর্যন্ত রোগী দেখেন ও অপারেশন করেন বলে সূত্রে জানা গেছে। এলাকাবাসীরা জানায় ক্লিনিক হওয়ার মতো কোন উপযোগী না হওয়ার পরও এমন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মাঝে মধ্যেই অপচিৎিসার শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: মোমিনুল হক জানান, নামসর্বস্ব ক্লিনিক বন্ধসহ অপচিকিৎসা বন্ধে ব্যবস্থার কথা জানান। নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সুমিত কুমার কুন্ডু জানান, শিশু মৃত্যুর এ ঘটনার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কথা হবে। এসব অপতৎপরতা রোধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানান তিনি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। জেলা সদরে প্রায় ২৮টি প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০টির বৈধ কাগজ পত্র নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন