মুসলিম বালিকা আসিফার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জম্মু ও কাশ্মীরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো কাশ্মীরের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে হাজারো জনতা। এতে যোগ দিয়েছে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ। গত দু’দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সেখানে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা আসিফার প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহŸান জানান। এ বছরের জানুয়ারিতে জম্মুর কাথুয়া জেলার রাসানা গ্রামে পশু চরানোর সময় আসিফা নিখোঁজ হয়। স¤প্রতি জম্মুর একটি জঙ্গল থেকে নিখোঁজ আসিফার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ আট ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেছে। এদের সবাই হিন্দু। পুলিশ বলেছে, হিন্দু অধ্যুষিত কাথুয়া জেলা থেকে মুসলিমদের বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে এই ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে এই ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অঞ্চলটিতে ভারত-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কয়েকজন নেতাসহ উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো অপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য র্যালিও করেছেন এসব নেতারা। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার তিন মাস পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সপ্তাহে এই বিষয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। কোনো অপরাধীই ছাড়া পাবে না। তবে প্রধানমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না কাশ্মীরের অধিবাসীরা। সেখানকার ছাত্র সানা বেঘ বলেন, ধর্ষণের বিচার করতে সরকার অনাগ্রহী। এটা লজ্জাজনক। কেউ কিভাবে অপরাধীদের সমর্থন করে বা নীরব থাকে? তিনি বলেন, ‘ভারতে কোনো মুসলিম নিরাপদ না। এই অপরাধের পেছনে উদ্দেশ্যটা দেখুন’। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দশক ধরেই কাশ্মীরে সংঘাত চলছে। তবে এবার ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ইসার বাতুল বলেন, কাশ্মীরের সংঘটিত এসব হয়রানির সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সরকার সরাসরি অপরাধ করছে না। কিন্তু তারা অপরাধীদের সুরক্ষা দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। স্থানীয় অধিবাসী হিনা খান বলেন, আসিফা ধর্ষণের ঘটনায় কাশ্মীরে সংখ্যালঘুদের প্রতি দীর্ঘদিনের নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠেছে। আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন