সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

আরেক আলোক স্তম্ভ হারিয়ে ফেললাম

ফা হি ম ফি রো জ | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাহিত্যের আরেক আলোক স্তম্ভ আমরা হারিয়ে ফেললাম, বেলাল চৌধুরীকে। খুব বেশি গাঢ় স্মৃতি তার সঙ্গে আমার ছিল, সেটা কিন্তু বলবো না। আমার কবিতা ভালোবাসতেন, এ তুখোর মানুষটি। এটাই এ গরীবের বড়প্রাপ্তি। তানা হলে, একটি বড় পত্রিকায় তিনি আমার চাকরির অফার দেবেন কেন? এর পেছনে অক্সিজেন ছিল সব্যসাচী লেখক আবদুল মান্নান সৈয়দের। যতদূর মনে পড়ে, তিনি আমাকে দেখা করতে বলেছিলেন, তার সঙ্গে মান্নান সৈয়দের উদ্ধৃতি উঁচিয়ে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলাম, ওখানে সমস্যা প্রভুত। তার এক মাস পরেই দুঃখজনকভাবে তিনি আর ওই পত্রিকায় ছিলেন না। সমস্যা হলো, ওই পত্রিকার ওই পদে তখন ঘন ঘন সাহিত্য সম্পাদক বদল হচ্ছিল। এদিকে রোজগারে নিশ্চয়তাটাও প্রধান বিষয়। আর তখন যে পত্রিকায় ছিলাম, এখনো বর্তমান আছি। কাজের একটি উত্তম পরিবেশ ছিল, এখনো সমাতালে। ব্যাপক স্বাধীনতা আছে- যা ওখানে আমি চিন্তাও করতে পারতাম না। কবি বেলাল চৌধুরী কবি হিসেবে সর্বত্র খ্যাতছিলেন। কিন্তু গদ্য লিখতেন চমৎকার। প্রতিভাবানদের চিহ্নিত করতেন তড়িতগতিতে। সম্পাদক হিসেবে ছিলেন সাদা মানব। তার উচ্চাঙ্গের একটি রাজনৈতিক বিশ্বাস ছিল কিন্তু তা তিনি কবিতা বিচারে কখনোই কারো পীঠে চাপিয়ে দিতেন না। বর্তমান সাহিত্য সম্পাদকেরা করে থাকেন অবলীলায়।
একজন অনিন্দা মুখর, কুটিল স্বভাবহীন- এরকম কবি, সম্পাদক, এদেশে কবে উত্থিত হবে, সেই অপেক্ষায় থাকলাম।
২. জীবনকাঠামোতে আশি বছর খুব বেশি সময় নয়। তারপরও সাহিত্যের বিবিধ শাখায় তার দানগুলো অস্বীকার করার নয়। কাব্যচর্চা, গল্প, গদ্য, সম্পাদনা, বিবিধ বিষয়ে তার লেখা, যা ছিল অত্যন্ত সুখপাঠ্য। জন্মে ছিলেন কোলকাতায়। ওখানেও ছিল তার শক্ত শিকড়। ওখানে কৃত্তিবাসের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন চুম্বকের মত।
৩. অনেক লেখকের জীবনে যা ঘটে, তিনিও তাই। বোহিমিয়ান হলেও সংসারের ক্ষেত্রে তা নয়। ভারতের বহু লোকের সঙ্গে তার সেতুবন্ধন ছিল। বিশেষ করে সুনীলের সঙ্গে।
৪. দীর্ঘ অসুস্থতার পর তিনি তার অনাকাক্সিক্ষত অন্ধকার রাস্তাকেই শেষ মেষ বন্ধু মেনে নিলেন। সবাই তা মানতে একদিন বাধ্য। চলে গেলেন। আমরা হারালাম সাহিত্যের এক আলোক স্তম্ভকে। হায় বেলাল ভাই!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন