দেশে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ি সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘন করে অধিক মুনাফার আশায় অবৈধপথে ইয়ামাহা ব্রান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি ও বাজারজাত করছে। যার মাধ্যমে একদিকে ক্রেতারা যেমন প্রতারিত হচ্ছেন তেমনি সরকারও হারাচ্ছে বড় অঙ্কের রাজস্ব। সেটি প্রতিরোধে রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। যেখানে চারটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৩ টি মোটরসাইকেল চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি ও বাজারজাতকরণের জন্য এসিআই লিমিটেডকে বৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করেন আদালত। প্রতিষ্ঠানটির প্রচলিত ও স্বীকৃত মডেলের বাইরে বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল দেশের বাজারে বিপনন করা হচ্ছে বলে জানতে পারে পুলিশ। যদিও এসিআই লিমিটেড ব্যতিত সকল অবৈধ আমদানিকারক থেকে আমদানিকৃত ইয়ামাহা ব্রান্ডের মোটরসাইকেল আমদানি, বিপনন, রেজিষ্ট্রেশন, মেকার্স কোড ও টাইপ অনুমোদন বাতিল ঘোষনা করে আদালত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাশাপাশি পুশ ইন্টারন্যাশনাল, নিউ সোনারগাঁ মোটরস, আরএন এন্টারপ্রাইজ, পোলারিস টেক লিমিটেড, পাওয়ারপ্যাক ইন্টারন্যাশনালসহ অনান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইয়ামাহা মোটরসাইকেল আমদানি ও বিপননের ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদালত। আর তা সরেজমিনে তদারকি করতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় শো-রুমগুলোতে রমনা থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে। মোট ১২ টি শো-রুমে অভিযান পরিচালনা করে তিনটিতে অবৈধ মোটরসাইকেলের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে শরিফ মোটরসে ফেজার মডেলের চারটি ও এফজেড মডেরেলে ৬টি। বাইক জোনে আর১৫ মডেলের ৩ টি, মুনতাহিনা মোটরসে এফজেড মডেলের ২ টি এবং ফেজার মডেলের ৩টি, এছাড়া নাহার এন্টারপ্রাইজে এফজেড মগেলের ১৫ টি অবৈধ মোটরসাইকেলের সন্ধান পেয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারীতে আরো একটি অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
রমনা থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (নাম দেওয়া যাবে না) জানান, অবৈধ আমদানিকৃত মোটরসাইকেল দিয়ে অপরাধমূলক কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। আর পরবর্তীতে অপরাধমূলক কার্যক্রম হলে চিহ্নিত করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। অবৈধভাবে দেশে আসা মোটরসাইকেল নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিধায় পুলিশ সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আবার বৈধআমদানিকারকরা সঠিক মূল্য প্রদর্শন করে দেড়শ শতাংশের বেশি শুল্ক প্রদান করেন। কিন্তু অবৈধ আমদানিকারকরা কম মূল্য দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাকি দিয়ে ভোক্তাদের প্রতারিত করে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়েই আদালতের নির্দেশনা মেনেই অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবৈধ এসব ব্রান্ডের মোটরসাইকেল ক্রেতারা কেনার পর সার্ভিস নেবার সময় সঠিক সময়ে সঠিক সার্ভিসটি পাননা। এমনকি প্রচলিত মডেল না হবার কারনে সঠিক যন্ত্রাংশও পাওয়া যায় না। আবার অবৈধ আমদানিকারকরা স্থানীয় স্পেয়ার পার্টস ও যন্ত্রাংশ সংযোজনের মাধ্যমে ভোক্তাদের প্রতারিত করে তাকে। এছাড়া বিআরটিএ থেকে রেজিষ্ট্রেশন করতে গেলে আমদানি প্রতিষ্ঠানের বৈধ অথরাইজেশন লেটার দরকার হয়। কিন্তু অবৈধ আমদানিকারকরা নকল কাগজপত্র দেখিয়ে বিআরটিএেথকে রেজিষ্ট্রেশন করে থাকে। ফলে সেটি দেশের আইন শৃঙ্গলা বাহিনীর জন্য উদ্বেগের কারন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন