রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

স্বপ্ন দেখছেন গদিনও

আর মাত্র ৩৫ দিন বাকী

| প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


স্পোর্টস ডেস্ক : একটি মুহূর্তও থেমে নেই সময় নদীর ¯্রােত। সেই ¯্রােতে পাল তুলে প্রায় দোরগোড়ার এসে পড়েছে বিশ্বকাপ ফুটবল। আর মাত্র ৩৫ দিন পরেই রাশিয়ায় বেঁজে উঠবে সেই মহাযজ্ঞের বাঁশি। বিশ্বজুড়ে ফুটবল রোমান্টিকদের যেন আর তর সইছে না। প্রিয় দলের জন্য একবুক স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন দর্শক সমর্থকরা। আর যারা ফুটবল মাঠে উত্তেজনার ঢেউ তুলে পুরো বিশ্বকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবেন তারা কি ভাবছেন?
লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, টমাস মুলারদের স্বপ্নের কথা আমরা জানি। নিজ নিজ দেশকে বিশ্বকাপের শিরোপা উপহার দিতে তারা মরিয়া। এজন্য তাদের সমর্থ্য নিয়েও কেউ প্রশ্ন তুলবেন না। কিন্তু আরো অনেক দল আছে যারা গোপনে এঁকে চলেছেন একই স্বপ্ন। তেমনি এক দল উরুগুয়ে। যে দলকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন অধিনায়ক দিয়েগো গদিন।
রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮ নিয়ে নিজের ভাবনা জগতকে থামাতেই পারছেন না ৩২ বছর বয়সী সেন্টার ব্যাক। একটু একটু করে বুনে চলেছেন নিজের স্বপ্ন। বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাস যাদের একটু হলেও জানা আছে তারা নিশ্চয় গদিনের এমন গোপন স্বপ্নে অবাক হবেন না। ১৯৩০ সালে আয়োজিত প্রথম ফিফা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল তারা। সব মিলে দু’বার বিশ্বকাপজয়ী দলের মর্জাদা অর্জন করেছে উরুগুয়ে। তবে সর্বশেষটি সেই ১৯৫০ সালে, ৬৮ বছর আগে। তৎকালীন ফিফা প্রেসিডেন্ট হুলেস রিমেত বিশ্বকাপের ট্রফি তুলে দিয়েছিলেন উরুগয়ে অধিনায়ক ওবদুইলো ভারেলার হাতে। এরপর লা সেলেস্তেরা তিনবার সেমিফাইনালে উঠলেও সেই গন্ডি পেরোতে পারেনিÑ ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরিতে, ১৯৭০ সালে ব্রাজিলে ও সর্বশেষটি ২০১০ সালের বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে।
এবারের বিশ্বকাপে অবশ্য যাদের নিয়ে ফুটবল বোদ্ধারা ভবিষ্যদ্বাণী করছেন সেই আট দলের মধ্যে নেই উরুগুয়ে। তা অবশ্য অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তারকার স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না, ‘একমন একটা দিনও যাচ্ছে না যেদিন আমি বিশ্বকাপ স্বপ্নকে সরিয়ে রাখতে পেরেছি।’ রেডিও রিনকনকে গদিন বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি শিরোপা উঁচিয়ে ধরারÑ অবশ্যই দেখি।’
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় স্থানে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে উরুগুয়ে। তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপে একেবারে পূর্ণ শক্তির দলই পাচ্ছে দলটি। একথা স্বরণ করে গদিন বলেন, ‘আমরা ভালোভাবেই বাছাইপর্ব উত্তরণ করেছি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো দলের কেউই চোটে আক্রন্ত হয়নি, সবাই-ই শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ আছে।’
এছাড়া কোচ অস্কার তাবারেজের উপরও পুরোপুরি আস্থা রাখছেন গদিন। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার পর তার অধীনে ২০১১ কোপা আমেরিকা জেতে উরুগুয়ে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড (২-১) ও ইতালিকে (১-০) হারায় তারা। এই দলের উপরও আস্থা আছে তার। বিশেষ করে যে দলে লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানির মত স্ট্রাইকাররা আছেন তাদের উপর যে কোন দলই আস্থা রাখতে পারে। জাতীয় দলের হয়ে ইতোমধ্যে ৯৭ ম্যাচে ৫০ গোল করেছেন বার্সেলোনা স্ট্রাইকার সুয়ারেজ, ১০০ ম্যাচে পিএসজি তারকার গোল ৪২টি।
এতকিছুতেও যদি এই দলের উপর আস্থা না রাখতে পারেন তাহলে গদিনের পরের কথাটি শুনুন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার পর গত আট বছরে এই দলের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দলীয় ঐক্য। বিশ্বকাপ বাছাই ও কোপা আমেরিকায় তা আমরা দেখিয়েছি।’ জাতীয় দলের হয়ে ১১৬ ম্যাচ খেলা এই তারকা বলেন, ‘এটাই আমাদের খেলোয়াড়দের ভিত্তি। যারা এখনো ভালো করছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। কিছু পরিবর্তন হয়ে অবশ্য দলে নতুন খেলোয়াড় এসেছে। তাদের ইউরোপে ও যুব দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু জাতীয় দল কখনই শক্তি হারাইনি। তারা মানিয়ে নিয়েছে। আমি সবসময় এটাই বলি। এটা ভালো যে, যখনই কেউ দলে এসেছে সে মানিয়ে নিয়েছে। আমরা তাই সঠিক পথেই আছি।’ গদিন যোগ করেন, ‘রক্ষণের দৃড়তা, দলীয় সংহতির নীতি ও স্ট্রাইকারদের কাছে দ্রæত বল পৌঁছে দেওয়া, এটাই আমাদের শক্তি। এটা আমরা হারাতে চাই না।’
এ তো গেল দলীয় ভাবনার কথা। গদিন নিজেকে নিয়ে কি ভাবছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এটা আমার কাছে অসাধারণ একটি বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে; এর কারণ আমার বয়স, খেলার ধরণ ও অভিজ্ঞতা। এই কারণেই আমি এটা পুরোপুরি উপভোগ করচে চাই ও জিততে চাই।
বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রæপে গদিনের উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ মিশর, সউদি আরব ও স্বাগতিক রাশিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন