ঝাল ও লাল মরিচের জন্য বিখ্যাত পূর্ব বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলে এবারও মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর এতে মরিচ চাষীরা লাভবান হয়েছে প্রভূতভাবে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গত বছরের চেয়ে এবার মরিচের আকার ও ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়,এবছর পুরো জেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৬শ ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ৭শ ১ মেট্রিক টন। তবে মরিচের বিশেষায়িত এলাকা হিসেবে শুধুমাত্র সারিয়াকান্দি উপজেলাতেই ৩ হাজার ৪শ ৯০ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ উপজেলায় চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। অক্টোবর-নভেম্বর মাঝামাঝি সময়ে মরিচ চাষাবাদ করা হয়। চাষীরা জানায়, মার্চ হতে এপ্রিল মাসের দিকে মরিচ বিক্রি করা যায়। সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের আনন্দ বাজার এলাকার মরিচ চাষী জাহাঙ্গীর আলম মুকুল ও শাহজাহান আলী জানান, এবার প্রতি একর জমিতে মরিচ উৎপাদনে খরচ হয়েছে গড় পড়তা ৫৬ হাজার টাকা। অপরদিকে বিদ্যমান বাজার মূল্যে প্রতি একর জমির মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১ লাখ টাকায়। চর কর্ণিবাড়ির আন্নেস আলী বলেন, দেশী মরিচের চেয়ে হাইব্রিড জাতের মরিচের ফলন বেশি হয়েছে। হাইব্রিডের মরিচের আগাম ফলন হওয়ায় কাঁচা মরিচের দামও বেশি পাওয়া গেছে। বাটিয়া চরের কৃষক আব্দুল আলিম জানান, এবছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন, প্রতি বিঘায় মরিচের ফলন পেয়েছেন গড়ে ৯ মণ করে। তিনি জানান, এখন বাজারে প্রতি মণ শুকনো মরিচের দাম প্রায় ৬ হাজার টাকা।
সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহাদুজ্জামান বলেন, এবারের মরিচের চারা রোপন মৌসুমে কুয়াশার প্রকোপ কম ছিল, রোদ বেশী ছিল, শীতও কম ছিল ফলে মরিচের গোড়া পচন (পঁচাড়ি) রোগ ছিলনা। পাশাপাশি ফি বছরের মত রেড মাইট (লাল মাকড়) পোকারও উপদ্রপ ছিলনা এবার। চারা রোপনের আগে বন্যা হওয়ায় জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী দেশীয় এবং বহুজাতিক কোম্পানীগুলো এজেন্ট নিয়োগ করে ও অস্থায়ী ক্রয় ক্যাম্প বসিয়ে মরিচ কেনায় উৎপাদক চাষী ও ফড়িয়া সবাই লাভবান হয়েছে বলেও জানান, দীর্ঘদিন মরিচ কেনাবেচার সাথে জড়িত ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন