বগুড়ার লাল মরিচ বা ঝাল মরিচের কদর ও চাহিদা দেশব্যাপী। এই খরিফ ফসলটির সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে পূর্ব বগুড়ার করতোয়া, বাঙালী ও যমুনা বিধৌত গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায়। তবে গত এক দশকে যমুনার চরে এর প্রসার বেড়েছে ব্যাপক হারে। সাধারণত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই চরের পলিমাটিতে বীজ ছিটিয়ে দিলে এরপর দু’তিনবার নিড়ানী দিলেই বিনা সারে বিস্তর ফলন হয় মরিচের।
মার্চ এপ্রিলে বিস্তীর্ণ চরের বুকে যখন শত শত বিঘা জমির সবুজ গাছের মরিচ গুলো লাল বর্ণ ধারন করে চরের মানুষ একে ‘লাল সোনা’ বলে ডাকে। সেই লাল সোনা এখন তোলার পর কটকটে রোদে শুকিয়ে বাজারে তোলা শুরু হয়েছে। বগুড়ার ধুনটের গোসাইবাড়ি হাটের খুচরা ক্রেতা জিয়া শাহীন জানালেন, মাঝে মাঝেই তিনি গ্রামে আসেন বিভিন্ন উপলক্ষে। এখন বিনা সারে কীটনাশক মুক্ত চাষাবাদে উৎপাদিত সবজি সেসাথে মরিচ কিনতে এসেছেন। তিনি জানেন যমুনার চরের গুণাগুণ। মরিচের ব্যাপারী রহমত মিয়ার মতে খরার কারণে এবারে মরিচের রং ও কোয়ালিটি ভালো হয়েছে। চরে মরিচ চাষিদের কাছে থেকে প্রকার ভেদে প্রতি মণ মরিচ ৪-৬ হাজার টাকায় কিনে হাটে এনে ৬-৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। সারিয়াকান্দি, গাবতলী ও ধুনটের ১৫টি বড়ো হাটে এখন চলছে শুকনো লাল মরিচের কেনাবেচা। তার মতে আগামী বর্ষার আগে পর্যন্ত হাট মরিচের বর্তমান দাম স্থিতিশীলই থাকবে। মরিচ চাষ সম্পর্কে বগুড়ার আঞ্চলিক কৃষি অফিসে তথ্য নিয়ে জানা যায় , চলতি অর্থবছরে গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় মোট ২১ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষামাত্রা ধরা হয়। উৎপাদনের টার্গেট ছিল ২১৬৯০ মেট্রিক টন। ধুনট ও সারিয়াকান্দির কৃষি অফিসাররা জানান, দুই উপজেলাতেই উৎপাদন ও চাষের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হয়েছে।
তারা জানান, বহুজাতিক ও স্থানীয় ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানীর এজেন্ট ও ফড়িয়ারা প্রতিযোগিতামূলকভাবে বেশিদামে লাল শুকনো মরিচ কেনায় মরিচ চাষিরা আগের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন