এমন তিনটি কাজ আছে, যাতে রোজা নষ্ট হয় না। এ তিনটি কাজ হলো শিঙ্গা লাগানো, বমি হওয়া, ও স্বপ্নদোষ হওয়া। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইরশাদ করেছেন : তিনটি কাজে রোজা নষ্ট হয় না। শিঙ্গা লাগালে, বর্মি হলে ও স্বপ্ন দোষ হলে। (তিরমিজী, বায়হাকী, আবু দাউদ)। এই তিনটি কাজের মধ্যে প্রথমটি ইচ্ছাধীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি ইচ্ছাধীন নয়। সহীহ বুখারী শরীফ ও মুসনাদে আহমাদে উদ্ধৃত হাদীসে বলা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) ইহরাম বাধা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং রোজাদার অবস্থায়ও শিঙ্গা লাগিয়েছেন। হযরত আনাস (রা:) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি ইহরাম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। তবে বহু হাদীসে উল্লেখ আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) প্রথমে ঘোষণা করে ছিলেন যে, শিঙ্গালাগালে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। পরে তিনি রোজা অবস্থায়ও শিক্ষা লাগিয়েছেন। ইমাম শাওকানী (রহ:) এই দুই ধরনের হাদিসের মধ্যে সমন্বয় সাধন প্রসঙ্গে বলেছেন যে, শিঙ্গালাগানো ঐ রোজাদারের জন্য মাকরুহ যে এর দরুন দূর্বল হয়ে পড়ে। আর যদি শিঙ্গা লাগানো রোজা ভাঙ্গবার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ইহা মাকরূহে তাহরিমী পর্যন্ত পৌঁছবে।
আর বমি করার বিষয়টি দুই ধরনের হতে পারে। এক : ইচ্ছাকৃত বমি করা, এবং দুই : অনিচ্ছায় বমি করা। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত বমি করে তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : তাকে রোজার কাজা আদায় করতে হবে। কারণ, এই বমির জন্য সে নিজে দায়ী। আর অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে-এর ও দুইটি অবস্থা হতে পারে। এক : অল্প স্বল্প বমি হওয়া, এবং দুই : মুখ ভরে বমি হওয়া। অল্প-স্বল্প বমি হলে রোজা নষ্ট হবে না। কিন্তু বমি যদি মুখ ভরে বের হয়, তবে হানাফী মাযহাব অনুসারে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে। আর বমি করতে করতে কেউ যদি ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে শুয়ে পড়তে বাধ্য হয়, তাহলে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং এর কাজা আদায় করতে হবে।
আর রোজা রাখা অবস্থায় ঘুমের ঘোরে কারো যদি স্বপ্নদোষ এবং শুক্র নিস্ক্রমন ঘটে, তাহলে রোজা নষ্ট হবে না। কিন্তু স্বপ্নদোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে যদি শুক্র নিস্ক্রমন হয় তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। অবস্থা ভেদে কাজা এবং কাফফরাও আদায় করতে হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন